
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রাশিয়ার তৈরি এ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাদের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের গোপনীয়তা নষ্ট করবে। কিন্তু তুরস্কের দাবি এস-৪০০ ও এফ-৩৫ একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়
ট্রাম্পের হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে শেষ অবধি নিজ দেশে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ নিয়ে এসেছে তুরস্ক। আকাশপথের নিরাপত্তার জন্য দেশটি এ মিসাইল ক্রয় করেছে। শুক্রবার রাশিয়া থেকে এ সিরিজের প্রথম চালানটি আঙ্কারায় পৌঁছায়। খবর বিবিসির। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এরদোগান সরকার গত মে মাসের প্রথম দিকে ঘোষণা দেয়, তারা চলতি জুলাইয়ে এ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। কিন্তু এর আগ থেকেই বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এরদোগান প্রশাসনের বাদানুবাদ চলছিল। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রাশিয়ার তৈরি এ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাদের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের গোপনীয়তা নষ্ট করবে। কিন্তু তুরস্কের দাবি এস-৪০০ ও এফ-৩৫ একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। ন্যাটো জোটের মিত্র হিসেবে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের উৎপাদন অংশীদার তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ কেনার চুক্তি প্রত্যাহার করবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তিতেও আছে।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে এ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার প্রতিবাদ হিসেবে তুরস্কে এয়ারক্রাফট সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি তুরস্কের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়া থেকে তুরস্ককে ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা প্রস্তাবও দিয়েছিল। মার্কিন প্রশাসন বলে আসছে, রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কেনার বদলে তুরস্ক তাদের কাছ থেকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক ন্যাটোভুক্ত দেশ হলেও এ জোটবহির্ভূত দেশ রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ঘনিষ্ঠ।
যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে চলমান এ বিতর্কে কিছুটা নিরাপদ দূরত্বে থাকছে ন্যাটো। গত মে মাসে ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এ নিয়ে বলেছিলেন, কোনো একটি দেশের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার বিষয়টি একান্তই তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে ন্যাটোর মতো একটি সামরিক জোটের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে পারা না পারার প্রসঙ্গটিই মুখ্য।