গেল বছর প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ায় এবং অপেক্ষাকৃত মাছের দাম কম থাকায় জনমনে ছিল স্বস্তি আর আনন্দ। কিন্তু এ বছরের চিত্রটা অপেক্ষাকৃত ভিন্ন। ইলিশ নিয়ে এবার জনমনে উদ্বেগ আর অস্বস্তির শেষ নেই। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও গেল বছরের তুলনায় দাম অনেক চড়া। এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, বাজার ছেয়ে আছে ডিমওয়ালা ইলিশে, যা ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ধরনের হুমকি।
আলোকিত বাংলাদেশে প্রকাশ, পদ্মা নদীর মাদারীপুর অংশে তিনটি ইউনিয়নের জেলেদের জালে প্রচুর ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ছে। ফলে মাদারীপুরের হাটবাজারে নিয়মিতই বিক্রি হচ্ছে ডিমওয়ালা ইলিশ। অথচ বাজারে মাছ বেশি পাওয়া গেলেও দাম গেল বছরের এ সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকার হাটবাজারে ইলিশের দামে পার্থক্য রয়েছে। ১ কেজি ৩০০ থেকে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম পরিমাণ মাছের পাইকারি দাম ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা, ১ কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম মাছের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, সরকার যদি ডিমওয়ালা মাছগুলো এ সময় ধরা নিষিদ্ধ করত, তাহলে আগামীতে এ মাছ থেকে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেত এবং মূল্যও কম হতো।
কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে বড় সাইজের ইলিশ প্রায় দুষ্প্রাপ্য হতে বসেছিল। জাটকা মাছই তখন বাজারে মিলত বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে আইন করে মা ইলিশ সংরক্ষণ ও জেলেদের একটা নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা থেকে বিরত রাখায় দেশে বৃদ্ধি পায় ইলিশের উৎপাদন। জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করে বড় বড় ইলিশ। উল্লেখ্য, সরকার অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ইলিশ ধরা নিষেধ করেছে। এক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হলে সামনের মৌসুমে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তখন মানুষ কম দামে ইলিশ কিনতে পারবেন। ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় বাড়ানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় নেওয়া উচিত। ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি এবং এর মূল্য সবশ্রেণির মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা হোকÑ এমনটাই চান দেশের মানুষ।