বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ৩, দগ্ধ শতাধিক নারী-শিশু

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪০ | অনলাইন সংস্করণ

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া নারী ও শিশুসহ অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬০ জনকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

নিহতদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীর পরিচয় জানা গেছে—তানভীর আহমেদ (অষ্টম শ্রেণি, ইংলিশ ভার্সন) ও জুনায়েদ হাসান (তৃতীয় শ্রেণি)। এদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে রাখা হয়েছে।

ঘটনার সময় বিমানটিতে থাকা পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরকে গুরুতর আহত অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে আছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করে এবং মাত্র ১২ মিনিট পর ১টা ১৮ মিনিটে মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের ভবন ‘হায়দার হল’-এ, যেখানে তখন বহু শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি দগ্ধ রোগী হাসপাতালে এসেছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও শিক্ষার্থী। বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. বিধান সরকার জানান, তাদের কাছে দগ্ধ চারজন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাইয়ান (১৪), জারিফ (১২) ও সবুজা বেগম (৪০) রয়েছেন।

দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। আহতদের মধ্যে অনেককে হেলিকপ্টারে করে সিএমএইচে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কাছাকাছি বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বাকি আহতদের।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই (৭০১) মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। দুর্ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

চিকিৎসকদের আশঙ্কা, আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দুর্ঘটনার পর থেকে স্কুল ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সহায়তায় সব বাহিনী একযোগে কাজ করছে।