ঢাকা ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

টানাবৃষ্টিতে রোজগার নেই নিম্ন আয়ের মানুষের, চালের বাজারও গরম

টানাবৃষ্টিতে রোজগার নেই নিম্ন আয়ের মানুষের, চালের বাজারও গরম

টানাবৃষ্টিতে যখন দিনমজুরদের আয় নেই, কাজকর্ম নেই ঠিক তখন পাবনার ঈশ্বরদীতে পাইকারী এবং খুচরা চালের বাজার হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠেছে। এতে মোটা এবং চিকন চালের আকার ভেদে প্রতি কেজি চালে ৪ থেকে ৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাসের ব্যবধানে চালের দামের এই তারতম্যের কারনে বিপাকে পরেছে নিন্ম আয়ের মানুষ। তবে চাল ব্যাবসায়ীরা চালের বাজার বৃদ্ধির জন্য ধানের মূল্য বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।

ঈশ্বরদী উপজেলার বড়ইচারা, জয়নগর, শিমুলতলা, দাশুড়িয়া, মুলাডুলি,আওতাপাড়া, সিলিমপুর, ঢুলটি আড়মবাড়িয়া এবং ঈশ্বরদী বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আঠাশ, গুটিস্বর্ণা, স্বর্ণা ৫, উনপঞ্চাশ, ধানিগোল্ডসহ সকল প্রকার মোটা চালে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা আর মিনিকেট,বাসমতি কাটারিসহ সকল চিকন চাউলে দাম বেড়েছে কেজি প্রতি প্রায় ৬ টাকা।

খুচরা বাজারেই চালের এমন উর্দ্ধমূখী দাম কিনা জানতে চাইলে ঢুলটি বাজারের এনামুল ষ্টোরের স্বত্তাধিকারী মো: এনামুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলার সবচেয়ে বড় চিকন চালের বাজার জাত কারী প্রতিষ্ঠান ভাই ভাই কোম্পানি গত ১ মাস ধরে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় মূল্য বৃদ্ধি করেছে ২০০ টাকা। আমরা যারা খুচরা দোকানদার তার থেকে চাউল ক্রয়করে খুচরা বাজারে বিক্রি করি তারা কিভাবে কমে বিক্রি করব বলেন?

উপজেলার আড়মবাড়িয়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পাইকারদের থেকে চাল কিনতেই হচ্ছে বেশী দামে কমদামে কিভাবে বিক্রয় করব?

তিনি বলেন, গত ১ মাস আগেও আঠাশ চাল বিক্রি করেছি ৫৪ টাকা এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৫৮ টাকা। এর নিচে বিক্রি করতে পারছি না । কারন এখন আমাদের কেনা পরছে বেশী তাই বিক্রিও করছি একটু বেশী দামেই।

মিনিকেট কাটারি আগে বিক্রি করতাম ৬০ টাকা এখন ৬৬ টাকার কমে বিক্রি করতে পারছি না। হঠাৎ দাম বাড়ায় কাস্টমারদের সাথেও বেশী কথা বলতে হচ্ছে আবার বেচা বিক্রিও কম হচ্ছে। কিন্তু চালের দাম বাড়লে আমরা কি করব? আমরা তো কিনে বিক্রি করি। যেমন কিনি, তেমন বিক্রি করি।

ঈশ্বরদী ইপিজেড মোড় এলাকার ব্যবসায়ী মো: মোরসালীন হোসেন বলেন, বাজারে বর্তমানে চালের বাজার চড়া। আপাতত ২ মাসের মধ্যে কমার কোন সম্ভাবনাও নেই। তবে কুষ্টিয়া অঞ্চলে কিছু আগাম জাতের মোটা ধান মাড়াই শুরু হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে পুরোদমে নতুন ধান উঠলে হয়তোবা চালের দাম কমতে পারে।

চালের বাজার হঠাৎ বাড়ার পেছনে কোন সিন্ডিকেট জড়িত কিনা জানতে চাইলে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চাল ব্যবসায়ী বলেন, ঈশ্বরদীতে কয়েকজন বড় চাউলের ব্যবসায়ী আছেন। যাদের গোডাউনে ঈশ্বরদী বাসীকে আগামী চার মাস খাওয়ানো সম্ভব এমন চাল মজুদ আছে। শুধু তাই নয় তারা ঈশ্বরদীর বিভিন্ন মিল থেকে চাল ক্রয় করে সবগুলোকে গুদামে মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী করেছে।

বড়ইচারা মন্ডল রাইচ এর ম্যানেজার তাজ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর চালের দাম তুলনামূলক ভাবে বেশী। তাছাড়া অটো এবং হাসকিং মিলের চালের দামের তারতম্যের কারনে খোলা বাজারে এর বড় প্রভাব পড়েছে।

চালের পাইকার ছাইদার হাজী বলেন, ধানের মূল্য বৃদ্ধির কারনে ঈশ্বরদীর অধিকাংশ হাসকিংমিল (চলমান) বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। যে অটো গুলো আছে সেগুলোও চলছে ধুকেধুকে। তবে সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করছে কুষ্টিয়া এবং নওগাঁর ব্যবসায়ীরা। মূলত তাদের সিন্ডিকেটের কারনেই চালের বাজারে এই অস্থিরতা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

টানাবৃষ্টি,আয়,চাল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত