বন্ধুত্বের ফাঁদে টেকনাফে অপহৃত দুই বন্ধুকে উদ্ধার, চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৫, ২১:০৫ | অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলে অপহরণের শিকার হলেন বগুড়ার দুই যুবক। কক্সবাজারের টেকনাফে বেড়াতে এসে তাঁরা রোহিঙ্গা অপহরণ চক্রের হাতে জিম্মি হন। অপহরণকারীরা নির্মম নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে পরিশোধও করা হয়।
অবশেষে টানা দুই দিনের অভিযানে পুলিশ ও নৌবাহিনী তাঁদের উদ্ধার করে এবং অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হলিদাবাগ এলাকার আবদুল হামিদের ছেলে মো. সবুজ মামুন (৩০) ও তাঁর ভাইপো মেহেদী হাসান টিটু (৩০) কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল আমিনের আমন্ত্রণে ২৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে আসেন।
দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব থাকায় আমিনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন তারা। কিন্তু সেই বন্ধুত্বই কাল হয়ে দাঁড়ায়। আবদুল আমিন পরিকল্পিতভাবে দুইজনকে অপহরণ চক্রের হাতে তুলে দেন। এরপর তাদের নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মামুনের স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
২ মার্চ অপহরণের ঘটনায় থানায় লিখিত এজাহার করেন মামুনের বোন সুলতানা বেগম। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনী দুইজনকে উদ্ধার করে এবং অপহরণ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন—হ্নীলা মৌলভীবাজার এলাকার মৃত ইসলাম মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলম (৩৫), হোয়াইক্যং নয়াবাজার এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো. ইউসুফ (৩০) এবং মৌলভীবাজার এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. ফয়সাল (১৯)।
বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলার মূল হোতা আবদুল আমিনকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি গিয়াস উদ্দিন।
অন্যদিকে, ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় টেকনাফের জাহাজপুরা মেরিন ড্রাইভ এলাকা থেকে মোহাম্মদ ফারুক (১৬) নামের এক ইজিবাইক চালককে গাড়িসহ অপহরণ করা হয়। এখনো তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
ফারুক বাহারছড়া ইউনিয়নের লামার বাজার এলাকার নুরুল হকের ছেলে। তার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের তথ্য বলছে, গত ১৪ মাসে টেকনাফ থেকে ২৪০ জন এবং উখিয়া থেকে ৮৭ জনকে অপহরণ করা হয়েছে।