গাইবান্ধায় সাঁওতাল হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর, স্মারকলিপি প্রদান
নিরপেক্ষ তদন্ত ও অভিযুক্তদের চার্জশিটভুক্ত করার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গোবিন্দগঞ্জের আদিবাসী সাঁওতাল পল্লীতে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় প্রকৃত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও চার্জশিটভুক্ত করার দাবিতে জেলা পুলিশ সুপার এর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়।
সোমবার (৭ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি নিয়ে গাইবান্ধা সদরে আয়োজিত কর্মসূচিতে আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদ, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি এবং সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ সহ শতশত আদিবাসী-বাঙালী অংশগ্রহণ করেন।
একটি বিক্ষোভ মিছিল পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গিয়ে স্মারকলিপি প্রাদনকালে অ্যাডভোকেট ফারুক কবীরের সঞ্চালনায় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক এ্যাড সিরাজুল ইসলাম বাবু, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কে, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, নাগরিক মঞ্চের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের গাইবান্ধা সদর উপজেলার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, আদিবাসী নেতা বার্নাবাস টুডু, স্বপন শেখ, বিশিষ্ট আইনজীবী এ্যাড কুশলাশীষ চক্রবর্তী, এ্যাড. মোহাম্মদ আলী, মানবাধিকার কর্মী মুনির হোসেন সুইট, রবিদাস নেতা খিলন রবিদাস, আদিবাসী নেতা ব্রিটিশ সরেন, তৃষ্ণা মুরমু, র্যাফায়েল হাসদা, মইনুল, দিপন প্রমুখ।
বক্তারা গোবিন্দগঞ্জের আদিবাসী সাঁওতাল পল্লীর এই অমানবিক সন্ত্রাসী হামলার মূলহোতা আসামি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের এমডি আব্দুল আউয়াল ও জিএম আব্দুল মজিদ, গোবিন্দগঞ্জের তৎকালীন ইউএনও আব্দুল হান্নান ও ওসি সুব্রত কুমার সরকার, অগ্নি সংযোগে চিহ্নিত এসআই ডিবি (পুলিশ) মাহবুব, সাজ্জাদ হোসেন সহ ১১ জন আসামিকে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কর্তৃক Further investigation Report এ নিরপেক্ষ তদন্ত করে চার্জশিটভুক্ত করার দাবি করেন। বক্তারা, শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি, রমেশ টুডু হত্যায় জড়িত চার্জশিট ভুক্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি, এবং বাগদা ফার্মের সাঁওতালদের পৈত্রিক সম্পত্তি ১৮৪২.৩০ একর জমি ১৯৬২ সালের Requisition চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সাঁওতালদের মাঝে আইনসঙ্গতভাবে ফেরতের দাবিও করেন।
পুলিশ সুপার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার মাধ্যমে স্মারকলিপি পাঠানোয় অপারগতা প্রকাশ করে তার বরাবর প্রদান করার সুপারিশ করলে তাকে তা প্রদান করা হয়। এবং নেতৃবৃন্দের আলোচনা সাপেক্ষে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে স্মারকলিপি ডাকযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ সাঁওতাল এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন আগামীদিনে আরও শক্তিশালী আন্দোলনে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি শেষে আদিবাসী-বাঙালী মিলে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিলও করেন।