বাড়ছে তিস্তার পানি, নদীপাড়ে আতঙ্ক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ১৫:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ভারতে থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও কয়েকদিন ধরে টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে নদী সংলগ্ন ৭৯টি চরে মানুষের মাঝে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যেভাবে হুহু করে বাড়ছে তাতে যে কোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন টানা কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ডুবে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে চাষাবাদকৃত ফসলের ক্ষেত। তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মহিবুর রহমান বলেন, আমরা নদী পাড়ের মানুষ সব সময় আতঙ্কে থাকি। বন্যা, খরা নদী ভাঙ্গনের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বর্ষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তবে পানি এখনো বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৗধুরী বলেন, পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে আছে, তবুও আমরা সতর্ক আছি।
