নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা গ্রহীতা ও সেবামূল্য আদায়ে নজির স্থাপন
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৮:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক মাসে সর্বোচ্চ সেবা গ্রহীতা ও সেবামূল্য আদায়ের নজির স্থাপিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর গত মাসে (জুলাই) এই সর্বোচ্চ সেবা গ্রহীতা ও সেবামূল্য আদায় করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, গত জুলাই মাসে মোট ২৬ হাজার ৫৯৪টি সেবা প্রদান করা হয়েছে, এরমধ্যে দরিদ্র অসহায়সহ বিভিন্ন কারণে বিনামূল্যে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ২২৬টি। ফলশ্রুতিতে ২৬ হাজার ৩৬৮টি সেবাদানে সেবামূল্য আদায় করা হয়েছে। এতে জুলাই মাসে মোট সেবামূল্য আদায় হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ টাকা; যা নকলা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরে এই প্রথম একমাসে সর্বোচ্চ সেবা গ্রহীতাকে সেবা প্রদানের পাশাপাশি সেবামূল্য আদায় হয়েছে।
এছাড়া জুলাই মাসে নকলা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাও ছিল সর্বোচ্চ। এছাড়া জুলাই মাস শুরুর ঠিক ৩দিন আগে তথা ২৮ জুন শনিবার এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারির পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারের সন্তানসম্ভবা মায়েদের বিনামূল্যে সিজারিয়ান সুবিধা কার্যক্রম শুরু করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান নিয়ে জনগণ বরাবরই খুশি। তাই দিন দিন সেবা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে তথা জুলাই মাসে এই হাসপাতালে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ও সেবামূল্য আদায়ের নজির স্থাপিত হয়েছে।
তিনি প্রশ্নের জবাবে জানান, জুলাই মাসে বহির্বিভাগে ১৮ হাজার ৪৫২ জন সেবা গ্রহীতা সেবামূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সেবা নিয়েছেন, এতে ৫৫ হাজার ৩৫৬ টাকা সেবামূল্য আদায় হয়েছে। এছাড়া দরিদ্র অসহায় ১৯৯ জন বিনামূল্যে সেবা নিয়েছেন। অন্তঃবিভাগ থেকে ১ হাজার ১৫২ সেবা গ্রহীতা সেবামূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সেবা নিয়েছেন, এতে ৫ হাজার ৭৬০ টাকা সেবামূল্য আদায় হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নিয়েছেন ২ হাজার ২৮০ জন, এতে সেবামূল্য আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৮৪০ টাকা। রক্ত সঞ্চালন বিভাগে ১১ জন সেবা গ্রহীতার নিকট ১০০ টাকা হারে মোট ১ হাজার ১০০ সেবামূল্য আদায় হয়েছে। প্যাথলজি বিভাগে ৩ হাজার ৯৪০ জন সেবা গ্রহীতা সেবা নিয়েছেন, এতে সেবা মূল্য আদায় হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার ১৭০ টাকা, যা সর্বোচ্চ। এছাড়া ৮৩টি আল্ট্রাসনোগ্রাম থেকে সেবামূল্য জমা হয়েছে ১১ হাজার ১০০ টাকা। এক্সরে বিভাগে ২৫০ জনের নিকট ১৩ হাজার ৪১৭ টাকা সেবা মূল্য আদায় করা হয়; এছাড়া দরিদ্র অসহায় ৮ জনের এক্সরে বিনামূল্যে করা হয়। গতমাসে নকলা-ময়মনসিংহ পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস থেকে ২৫ জন রোগীর নিকট ২৭ হাজার ৫০০ টাকা সেবা মূল্য আদায় হয়; এছাড়া দরিদ্র অসহায় ও দুর্ঘটনা কবলিত ২ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের কেবিন ও অন্যান্য খাত থেকে ২৫টি সেবা থেকে মোট সেবামূল্য আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ টাকা।
নকলা হাসপাতালের এই কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা নকলা হাসপাতালে কর্মরত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
তিনি বলেন, এই সাফল্য পুরোটাই হাসপাতাল স্টাফদের এবং উপজেলাবাসীর। কারণ উপজেলাবাসী আমাদের প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন বলেই তারা স্বাস্থ্যসেবা নিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ-শেরপুরে দৌঁড়াদৗঁড়ি করেন নাই। আর হাসপাতালে কর্মরত সকল চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিষ্ঠা আন্তরিকতার সহিত সেবা প্রদান করায় এই হাসপাতালের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে বলেই আজ নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠার পরে এই প্রথম কোন একমাসে সর্বোচ্চ সেবা গ্রহীতাকে সেবা প্রদানের পাশাপাশি সর্বোচ্চ সেবামূল্য আদায়ে নজির স্থাপন করতে সমর্থ হলো।
