মেসি হওয়ার স্বপ্ন ক্ষুদে ফুটবলার সোহানের
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২০:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি

যারা এ সময়ের ফুটবলপ্রেমী কিংবা ভালো ফুটবলার হতে আগ্রহী, তাদের অধিকাংশই বিশ্বনন্দিত ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস মেসির ভক্ত ও অনুসারী। এর ব্যতিক্রম নয় চাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদে ফুটবলার সোহান। অনন্য প্রতিভার অধিকারী মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী এই শিশু তার ভবিষ্যৎ জীবনে মেসি হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। ফুটবল খেলার কিছু কৌশল দেখিয়ে সে ইতোমধ্যেই সবার দৃষ্টি কেড়েছে। তবে এই প্রতিভার ধারাবাহিকতার জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
সরেজমিনে এই শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে তার ফুটবল খেলার নানা কৌশল। কথা হয়েছে তার বাবা, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচানি গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. সোহেল প্রধানিয়ার ছেলে মো. সোহান। দুই ভাইবোনের মধ্যে সোহান ছোট। তার বাবা সোহেল প্রধানিয়া পেশায় একজন সাইকেল মেরামতের মিস্ত্রি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট বাড়িতে শিশু ফুটবলার সোহান পরিবারের সঙ্গে থাকেন। স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিশু শ্রেণিতে পড়ে সোহান। তার বোন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে।
সাড়ে পাঁচানি গ্রামের শিশুদের জন্য খেলার কোনো মাঠ নেই। অধিকাংশ শিশুই সড়কে কিংবা ফসলি জমিতে খেলাধুলার চর্চা করে। শিশু সোহানও তার বাড়ির আঙিনায় এবং বাবার সাইকেল গ্যারেজের সামনে রাস্তায় নিয়মিত ফুটবল খেলার চর্চা করে।
সোহান বলেন, “বাবাই আমাকে খেলা শেখান। আমি বড় হয়ে মেসির মতো খেলোয়াড় হতে চাই।”
সোহানের খেলার সহপাঠী নাজিম জানান, “সোহান বয়সে ছোট হলেও তার খেলার ধরণ অনেক ভালো। তার বাবাই প্রতিদিন ফজরের নামাজের পরে তাকে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ দেন। এরপর দিনের অন্য সময় সোহান আমাদের সঙ্গে খেলে।”
শিশু সোহানের দাদী রোকেয়া বেগম বলেন, এক বছর বয়স হওয়ার পর দাদা শাহ আলম তাকে বল কিনে দেন। তখন থেকেই তার ফুটবলের প্রতি আগ্রহ জন্মে। খেলার প্রতি তার যে আগ্রহ, তা দেখে আমরা সবাই খুব আনন্দিত। প্রতিদিনই অনেক লোকজন বাড়িতে তার খেলা দেখার জন্য আসে। আমার ছোট এই নাতি বড় খেলোয়াড় হবে, এটাই আমাদের স্বপ্ন।
সোহানের বাবা মো. সোহেল প্রধানিয়া বলেন, সোহানের ফুটবল খেলার চর্চা ও প্রশিক্ষণ আমার হাতেই। আমাদের এলাকায় খেলার মাঠ নেই। আমি সাইকেল মেরামতের কাজ করি, সেখানেই সড়কের পাশে তাকে প্রশিক্ষণ দিই।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ক্রিকেটার মো. শামছুজ্জামান ডলার বলেন, লোকমুখে সোহানের ফুটবল খেলার বিষয়ে জানতে পেরে তার বাড়িতে যাই। একজন ক্ষুদে ফুটবলারের ফুটবলের ওপর এমন দখল সত্যিই অসাধারণ। মূলত এটি আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিভা। বলের প্রতি তার অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কয়েকজনের সঙ্গে তার খেলা দেখে আমি রীতিমতো বিস্মিত হয়েছি। তাকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। কারণ তার বাবা একজন দরিদ্র মানুষ এবং সাইকেল মেকানিক।
