দুর্গাপুরে কবিরাজির আড়ালে দেহ ব্যবসা ও মাদক কারবারির অভিযোগ
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯:১২ | অনলাইন সংস্করণ
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেনকীফান্দা গ্রামে জালাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির কবিরাজি চিকিৎসার আড়ালে গড়ে উঠেছে ভয়াবহ অপরাধ সাম্রাজ্য। দীর্ঘদিন ধরে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা নারীদের ব্যবহার করে তিনি পরিচালনা করছেন দেহ ব্যবসা ও মাদক কারবারের আসর।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ১৩ বছর ধরে এ অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন তিনি।
জানা গেছে, মেনকীফান্দা গ্রামের নবী হোসেনের ছেলে জালাল উদ্দিন শারীরিকভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও আংশিকভাবে দেখতে পারেন। সরকারি পাহাড়ি টিলা লিজ নিয়ে পাহাড় কেটে নির্মাণ করেছেন দুইতলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। পাশাপাশি পুকুর, মাছ চাষ ও জমি কেনাসহ বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন অনৈতিক উপায়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কবিরাজি চিকিৎসার নামে নারীদের তিনদিনের জন্য তার বাড়িতে থাকতে হয়। এই সময় প্রতি দম্পতিকে দিতে হয় ১৮০০ টাকা এবং রান্নার গ্যাস বিল বাবদ আরও ৯০০ টাকা। রাতে ‘জ্বিন হাজির’ দেখানোর নামে নারীদের নির্জনে রাখা হয়, যেখানে স্বামী বা অভিভাবক প্রবেশ করতে পারেন না। এ সুযোগে চলে অনৈতিক কার্যক্রম।
এলাকাবাসীর দাবি, বিভিন্ন জেলা থেকে দরিদ্র ও অসহায় নারীদের প্রলোভন দেখিয়ে আনা হয় এবং পরে তাদের দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। কেউ একবার জালালের কবলে পড়লে আর ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকে না।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক সেবন ও ব্যবসার সঙ্গেও তার সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে তিনি এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী অলিউল্লাহ জানান, স্ত্রীর রোগমুক্তির আশায় তিনি জালালের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুফল পাননি।
একইভাবে পৌরসদরের মাহমুদা আক্তার অভিযোগ করেন, তিন কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও প্রতিশ্রুত চিকিৎসা পাননি, বরং প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
জালালের মা দাবি করেন, তার ছেলে সাত বছর ধরে কবিরাজি করছেন এবং রোগীরা তিনদিন থেকে চিকিৎসা নেন।
এ বিষয়ে জালাল জানান, আমার কাছে মানুষ আসে। এখানে তিনদিন থাকে। চিকিৎসা নেয়। কেউ ভালো হয়। আমি ঝাড়-ফুঁক দেই। আমার আম্মাও কবিরাজি করতেন। আমার সেবায় অনেকে সুস্থ হয়েছেন। এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে লেগে গেছে। আমি মাদক কারবারির সাথে সম্পৃক্ত নই।
