কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ১০ ঘণ্টা অচলাবস্থা, পরে অবরোধ প্রত্যাহার

সড়কে ফুটবল খেলে শিক্ষকদের অনন্য প্রতিবাদ

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ

  উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের পুনর্বহালের দাবিতে টানা প্রায় ১০ ঘণ্টা অচল ছিল কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক।

সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকে উখিয়ার কোর্টবাজার চৌরাস্তার মোড়ে অনশন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করলে সকাল থেকেই এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ হিসেবে ফুটবলও খেলেন। দীর্ঘসময় অবরোধে কোর্টবাজার ও আশপাশের এলাকায় কয়েক কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী, অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধ্য হন।

পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ও আলোচনার আশ্বাসে বিকেলে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষকরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাস এবং ব্র্যাক কর্তৃক অতিরিক্ত ১৫০টি লার্নিং সেন্টার চালুর সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আপাতত অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষক প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম শামীম বলেন, “আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন পুরোপুরি স্থগিত করিনি, কেবল সাময়িকভাবে সরে এসেছি। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে বাধ্য হয়ে আবারও বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে হবে।”

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী জিনিয়া শারমিন রিয়া বলেন, “উখিয়ার মানুষ যখন রাজপথে দাঁড়িয়েছিল নিজের অস্তিত্বের দাবিতে, তখন নেতারা বলেছিলেন পাশে থাকবেন। কিন্তু আজও কোনো সমাধান নেই, শুধু নীরবতা। প্রতিশ্রুতি কি মিথ্যে ছিল?”

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুদ্দিন শাহীন সাংবাদিকদের জানান, “আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়ার পর তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করি সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমিয়ে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে।”

তবে শিক্ষকরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে আবারও কঠোর কর্মসূচি হাতে নেবেন। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধসহ আরও বৃহত্তর আন্দোলনেরও ঘোষণা দেন তারা।

অবরোধ প্রত্যাহারের পর কোর্টবাজার এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও শিক্ষকদের এ আন্দোলনকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে এখনও উদ্বেগ বিরাজ করছে।