হোসেনপুরে সোনালী আঁশের ফলন ও দামে খুশি চাষিরা
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২১:০৮ | অনলাইন সংস্করণ
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

তীব্র খরার কারণে বপন মৌসুমে বিলম্ব হলেও কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে পাট চাষ থেমে থাকেনি। দিনদিন চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে সোনালী আঁশের প্রতি। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় এ বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৩৯৭ হেক্টর জমিতে। তবে বাস্তবে আবাদ হয়েছে আরও বেশি জমিতে। এর মধ্যে দেশীয় জাতের পাট ২ হাজার হেক্টর, তোষা জাত ৩০০ হেক্টর এবং অন্যান্য জাতের ৯৭ হেক্টর।
বর্তমানে স্থানীয় হাটে ভালো মানের পাট প্রতি মণ ৩৬০০ থেকে ৩৯০০ টাকায় এবং নিম্নমানের পাট ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর যেখানে দাম ছিল মণপ্রতি ২৭০০–২৯০০ টাকা, এবার তা বেড়ে ৩০০০–৩৯০০ টাকায় উঠেছে। ফলে কৃষকেরা মণপ্রতি গড়ে ১৩০০–১৪০০ টাকা পর্যন্ত লাভ পাচ্ছেন।
তবে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। শুধু শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির কারণেই মণপ্রতি খরচ বেড়েছে ২০০–২৫০ টাকা। আগে যেখানে প্রতি মণ পাট উৎপাদনে খরচ হতো প্রায় ২৩০০ টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০০–২৭০০ টাকায়।
হোসেনপুর বাজারের ব্যবসায়ী খোকন মেম্বার জানান, “গত সপ্তাহে মণপ্রতি দাম ছিল ৩৯০০ টাকা, এবার কিছুটা কমে ৩৭০০–৩৮০০ টাকায় নেমেছে। তবে কৃষকেরা এখনো ভালো দাম পাচ্ছেন।”
চাষিদের মধ্যে অনেকে আশঙ্কা করছেন, সরবরাহ বাড়লে দাম কমতে পারে। তবুও উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম, সাহেবের চর গ্রামের মফিজ উদ্দিন ও চর বিশ্বনাথপুরের হেলাল উদ্দিনসহ অনেক চাষি জানান, অন্যান্য কৃষি ফসলের তুলনায় পাটে খরচ কম হয়, বাজারদরও বেশি। ফলে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক হারে পাট চাষ করবেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস. এম. সাহজাহান কবির বলেন, ‘প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। দামও সন্তোষজনক। আশা করছি, হোসেনপুরে পাটের সুদিন ফিরবে।’
