উচ্ছেদ অভিযানকালে দখলদারদের হামলায় পুলিশ আহত, আটক ৩

প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  কক্সবাজার অফিস

কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে দখলদারদের হামলায় পুলিশের এক সদস্য আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

সোমবার সকাল থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নদী উদ্ধারে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। প্রথম দিনে উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনার মালামাল ও ভরাট করা মাটি প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি হয়। মঙ্গলবারও উচ্ছেদ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই দখলদাররা বাধা দিলে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, অভিযানের সময় দখলদাররা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ কনস্টেবল করিম আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিআইডব্লিউটিএ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযানে অংশ নেন। হামলার পর কঠোর অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।

বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, দুই দিনে তিন একরের বেশি জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। প্রথম দিনে উচ্ছেদ হওয়া মালামাল ও ১৫ ফুট গভীর পর্যন্ত ভরাট মাটি নিলামে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের উচ্ছেদ শেষে আবারও নিলাম হবে।

সূত্র জানায়, ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে রামু ও কক্সবাজার সদর হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। এর মধ্যে নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারে সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে। গত এক দশকে এখানে গড়ে উঠেছে সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা।

২০১০ সালে সরকার বিআইডব্লিউটিএকে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিযুক্ত করলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত ছিল। ২০২৩ সালে যৌথ অভিযানে ৬ শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও পরে ফের দুই শতাধিক স্থাপনা নির্মিত হয়।

সম্প্রতি হাইকোর্ট নদীর সীমানা নির্ধারণ করে আগামী চার মাসের মধ্যে সব দখলদার উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ বাস্তবায়নে সোমবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হবে।