ব্রিজ ভাঙায় অচল যোগাযোগ, দুর্ভোগে ঈশ্বরগঞ্জের ১৪ গ্রামবাসী
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বটতলা গ্রামে অবস্থিত বেইলি ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে। এক বছরেরও বেশি সময় পার হলেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় চর-আলগী, আতকাপাড়া, পূর্বপাড়া, মরিচারচর, টান মলামারী, শান্তিনগরসহ ১৪টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
জানা যায়, ব্রিজটি ১৯৯০ সালের দিকে নির্মিত হয়। ২০২৩ সালে প্রথমবার ভেঙে গেলে স্থানীয়রা নিজস্ব অর্থায়নে একটি সাঁকো তৈরি করেন। পরবর্তীতে প্রশাসনের উদ্যোগে স্টিলের কালভার্ট বসিয়ে মেরামত করা হলেও ২০২৪ সালের প্রবল বর্ষণে আবারও ধসে পড়ে ব্রিজটি। এরপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হলেও সেটিও ভেঙে গিয়ে অচল হয়ে যায়। ফলে বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় পুরো এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সবজি ও ফসল উৎপাদনে সমৃদ্ধ এ অঞ্চলের কৃষকরা বাজারে পণ্য নিতে না পেরে মাঠেই ফসল নষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তারা চরম লোকসানের শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া ব্রিজসংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সাঁকো পার হতে না পেরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। রোগী পরিবহনসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর ধরে একই দুর্ভোগে আছেন তারা। স্থানীয় এক কৃষক বলেন, “আমাদের ফসল মাঠেই পচে যাচ্ছে। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। অসুস্থ মানুষকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। অথচ প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিচ্ছে, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”
আতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আহসানুল হক সিয়াম বলেন, “যদি একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হয়, আমরা এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাব। কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতেও আর ভয় পাবে না। আমার আশা, প্রশাসন এটি দ্রুত সমাধান করবেন।”
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন, উপজেলার অর্থায়নে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানিয়েছে, ব্রিজের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাসার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, তবটলায় নতুন একটি ব্রিজের জন্য প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এই অর্থবছরের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
এলাকাবাসীর দাবি, অচিরেই স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
