মানিকগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধর ও বহিষ্কার, মায়ের অভিযোগ
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জে তাহফিজুল কুরআনিল কারিম মাদরাসার পরিচালক ক্বারী মুরাদ হোসাইনের বিরুদ্ধে ৭ বছরের এক শিক্ষার্থীকে মারধর, মানসিক নির্যাতন ও বহিষ্কারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর মা মোসাম্মৎ রিনা আক্তার জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানা রোডের গঙ্গাধরপট্টি এলাকায় অবস্থিত মাদরাসাটি মানিকগঞ্জের সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল একটি মাদ্রাসা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রিনা আক্তারের ছেলে তাহির মাহমুদ (৭) ওই মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থী। গত ২০ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বিষয়টি মাদ্রাসার পরিচালককে জানান। ২৪ আগস্ট ছেলে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে মাদ্রাসায় নেওয়ার পর জানতে পারেন, নৌকাবাইচ দেখতে যাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে। এমনকি যারা অসুস্থ থাকায় যাননি, তাদেরও মারধরের শিকার হতে হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২৫ আগস্ট পরিচালক ক্বারী মুরাদ তাহিরকে অফিসকক্ষে ডেকে নৌকাবাইচে যাওয়ার অভিযোগে মারধর করেন। অথচ ওইদিন সে অসুস্থ থাকায় কোথাও যায়নি। বিষয়টি জানার জন্য রিনা আক্তার ছেলের ক্লাস শিক্ষককে ফোন করলে পরিচালক ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অফিসে ডেকে নেন। সেখানে সবার সামনে অপমান করে বলেন, “মিথ্যা কথা বলে এমন সন্তান জন্ম দিয়েছেন কেন?”
এরপর পরদিন মাদ্রাসার নোটিশ বোর্ডে মা-ছেলের নাম উল্লেখ করে বহিষ্কারের ঘোষণা টানানো হয়। এতে পরিবারটি চরম মানহানির শিকার হয়।
রিনা আক্তারের অভিযোগ, ভর্তির সময় সাড়ে ৮ হাজার টাকা, পোশাকের জন্য ২৮শত টাকা, জেনারেটরের জন্য ১ হাজার টাকা, কুরআন হাতে নেওয়ার সময় মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও অনাবাসিক ছেলের জন্য প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে বেতন দিয়ে আসছিলেন। মাঝপথে এভাবে ছেলেকে বহিষ্কার করায় তার পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে এবং মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে।
তাফিজুল কুরআনিল কারিম মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, মাওলানা মুহাম্মাদ মুরাদ হোসাইন বলেন, এই ছাত্র তার ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রদের গলা টিপে ধরে, কেউ বাথরুমে গেলে ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়, নিয়মিত ক্লাসে আসে না। এখন আপনিই বলুন তাকে কি করা উচিত।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমানউল্লাহ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
