হোসেনপুরে সবুজ ধানের দোলায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৭ | অনলাইন সংস্করণ

  আশরাফ আহমেদ, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)

‘সবুজ ধানে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ, কি অপরূপ সাজে সেজেছে আজি মাঠ-ঘাট’; ‘দখিনা সমীরণে হেলে দুলে খেলছে সবুজ পাতা, আয়না ছুটে মাঠে তোরা, দেখতে সবুজ কাঁথা’। কবিতার এই পংক্তিগুলোর মতোই চলতি রোপা-আমন মৌসুমে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের বিস্তীর্ণ মাঠ এখন সবুজের সমারোহে ভরে উঠেছে।

দিগন্তজোড়া মাঠজুড়ে ঢেউ খেলানো ধানগাছ যেন কৃষকের স্বপ্নকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তুলেছে। হেমন্তের বাতাসে রোপা আমন ধানের সবুজ ঢেউ কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। অচিরেই শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হবে। প্রকৃতি জুড়ে দুলবে সোনালী ফসলের সমুদ্র।

মাঠে ধানের কাঁচা শীষ দেখে কৃষকদের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। কৃষাণীর শূন্য গোলা ভরে উঠবে সোনালী ধানে—এই স্বপ্নে ভাসছে তারা।

এ সময় ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, কীটনাশক ব্যবহার আর পাখি তাড়ানোর কাজে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা।

হোসেনপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে হাইব্রিড ধানের বীজ দেওয়ায় চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার পুমদি, শাহেদল, গোবিন্দপুর, আড়াইবাড়িয়া, জিনারী ইউনিয়নের চর কাটিহারী ও চর হাজিপুর, সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর, চর বিশ্বনাথপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আমন রোপণ হয়েছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এ বছর বিনা সেভেন ৮, হাইব্রিড বিধান-৭, ২৮, ২৯, ৪৯, ৫২, বায়ার কোম্পানির ধানী গোল্ড, তেজ এবং পেট্রোকেম কোম্পানির পাইওনিয়ার এগ্রো-১২ জাতের ধান রোপণ করছেন। কৃষকদের অনেকে জানান, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এবার তারা বেশি জমিতে আমন ধান রোপণ করেছেন।

হোসেনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ কে এম শাজাহান কবির জানান, চলতি মৌসুমে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন রোপণ হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।