রোগী দেখে বাড়ী ফেরার পথে চিকিৎসকের মৃত্যু

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:০১ | অনলাইন সংস্করণ

  হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখে কুমিল্লার বাসায় ফেরার পথে কয়েকটি মোটরসাইকেলে উশৃঙ্খল যুবকদের ধাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন চর্ম, যৌন, অ্যালার্জি ও কুষ্ঠরোগ বিশেষজ্ঞ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. নাজমুল হাসান আখন্দ।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বিজরা এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। তিনি প্রতি বুধবার হাজীগঞ্জে চেম্বার করতেন।

চেম্বার শেষে ডা. নাজমুল হাসান আখন্দ ব্যক্তিগত গাড়িতে হাজীগঞ্জ থেকে কুমিল্লা শহরের দিকে ফিরছিলেন।

নিহত ডা. নাজমুল হাসান আখন্দ কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলায়। তিনি দুই সন্তানের জনক।

লাকসাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডা. নাজমুল হাসান আখন্দ প্রতি বুধবার হাজীগঞ্জ বাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চেম্বার করতেন। তিনি তার ব্যক্তিগত গাড়িতে হাজীগঞ্জ-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতেন।

ওইদিন চেম্বার শেষে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কের লাকসামের বিজরা এলাকায় পৌঁছালে ২-৩টি মোটরসাইকেলে কয়েকজন উশৃঙ্খল তরুণ তার গাড়িটিকে ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে তিনি বিজরা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেন। এতে কেউ হতাহত না হলেও, ধাওয়া দেওয়া তরুণরা এসে গাড়ির লুকিং গ্লাস ভাঙচুর করে চলে যান। আতঙ্কিত হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দেখেন তিনি আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

ওসি নাজনীন সুলতানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি চালানোর সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। এতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে মোটরসাইকেল চালকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধাওয়া দেন এবং হেলমেট দিয়ে গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে দেন। ধারণা করা হচ্ছে, আতঙ্কিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকে ওই চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।

সিডি প্যাথ অ্যান্ড হসপিটালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মুন্সী বলেন, সড়কে কী ঘটেছে সেটা আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। ডাক্তার নাজমুল একাই ছিলেন গাড়িতে। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

রাত ৯টায় কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলা এলাকায় মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। চিকিৎসকের পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ এখনো সম্ভব হয়নি।

ঘটনাটি নিশ্চিত করে শোক প্রকাশ ও দোষীদের বিচারের দাবি করেছেন হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ্ হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী তোফায়েল আহমেদ।