গোয়ালন্দে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৩ | অনলাইন সংস্করণ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে পুলিশের ওপর হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– গোয়ালন্দ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গি গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে হিরু মৃধা (৪০), দেওয়ান পাড়া গ্রামের জহির উদ্দীনের ছেলে এনামুল হক জনি (৩২),কাজিপাড়া গ্রামের আরিফ কাজির ছেলে অপু কাজি (২৫), দেওয়ানপাড়া গ্রামের আফজাল সরদারের ছেলে মো. শাফিন সরদার (১৯) ও দক্ষিণ উজানচর গ্রামের আক্কাস মৃধার ছেলে মাসুদ মৃধা।
এর আগে, গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) জুমার নামাজের পর রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে ইমাম মাহাদী দাবিদার নুরাল পাগলের দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত এবং দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। একপর্যায়ে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সেনাবাহিনী ও র্যাব মোতায়েনের পর।
উল্লেখ্য, আশির দশকে নুরুল হক নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবি করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। পরে চাপের মুখে এলাকা ছাড়লেও কিছু ভক্তসহ তিনি পুনরায় ফিরে এসে দরবার প্রতিষ্ঠা করেন। সম্প্রতি ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হলে তাকে গোয়ালন্দ দরবার শরিফে মাটি থেকে উঁচু স্থানে, কাবা শরিফের আদলে একটি কাঠামো বানিয়ে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়।
স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে, একটি কমিটি গঠন করে এবং পরিবারকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ও দেয়। কিন্তু শুক্রবারের জুমার পর তৌহিদি জনতা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে এবং এরপর হামলায় অংশ নেয়।
নুরাল পাগলার দরবারে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। এতে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার দিন রাতেই গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
