হাসিনা, কাদের, শামীমসহ ৪৫ জনের নামে হত্যা মামলা

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:২৩ | অনলাইন সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মোহাম্মদ সজিবের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক এমপি একে এম শামীম ওসমানের নামসহ ৪৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও একশ’ থেকে দেড়শ’ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।

৪৫ জনের মধ্যে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, শামীম ওসমান ছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক প্রশাসক ও কৃষক লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মতিন প্রধান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক ও নাসিকের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি এবং থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও নাসিকের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের নাম রয়েছে।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীনুর আলম।

মামলাটি গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে থানায় রুজু করা হয়। নিহত সজিবের বাবা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। শহীদদের সরকারি গেজেটে সজিবের নামের ক্রমিক নম্বর ৫৩৬। প্রায় এক বছর দেড় মাস পর তিনি নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা মামলাটি নথিভুক্ত করে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা ওই হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। বাদীর অভিযোগ, সজিব নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের ‘বিক্রমপুর হার্ডওয়ার’ দোকানে চাকরি করতেন। ঘটনার দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ মিছিল করছিলেন। এতে ওই এলাকার দোকানপাট ও যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। সকাল ১১টার দিকে দোকান বন্ধ হলে সজিব বাসায় না গিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন।

বাদী অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরিকল্পনায় এবং শামীম ওসমানের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা নারায়ণগঞ্জে একাধিক গোপন বৈঠক করে। বৈঠকে আন্দোলন দমনে হামলার সিদ্ধান্ত হয়। পরে তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়।

গুলিতে সজিব ঘটনাস্থলেই আহত হন। তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিলে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২২ জুলাই সজিবকে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ঘটনার পর বাদী সালাউদ্দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন। থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পরে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।

বাদী অভিযোগ করেন, প্রশাসনের উদাসীনতা ও রাজনৈতিক চাপের কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।