লালমনিরহাটে ব্লক পদ্ধতিতে তুঁত চাষ

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:২৭ | অনলাইন সংস্করণ

  আরিফুর রশীদ, লালমনিরহাট

তুঁত বা মালবেরি উচ্চমূল্যের রসালো ফল, যার আদিবাস চীন দেশ। ইংরেজিতে মালবেরির অর্থ জাম হলেও এটি স্বাদ ও গুণে ভিন্ন। বাংলাদেশের মাটিতে উৎপাদিত তুঁত পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি সুস্বাদু। জুস, জ্যাম ও জেলি তৈরিতে এ ফল বিশেষ জনপ্রিয়।

বসন্তের শুরুতে গাছে আসে নতুন পাতা। ছোট টব, পাত্র কিংবা পলিব্যাগেও এ গাছ সহজেই বেড়ে ওঠে এবং প্রায় সারা বছরই ফল দেয়।

প্রথমে ফল সবুজ, পরে লাল এবং সম্পূর্ণ পাকলে কালো হয়ে যায়। একসময় গ্রামে প্রচুর তুঁত গাছ দেখা যেত। ফেব্রুয়ারি-মার্চে ফুল আসে, মার্চ-এপ্রিলেই ফল পাকে।

তুঁত পাতাই রেশম পোকার প্রধান খাদ্য। রেশম পোকার গুটি থেকে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় রেশমি সুতা, আর সেই সুতায় তৈরি হয় সিল্ক কাপড়। এ কারণে লালমনিরহাটে রেশম পোকার খাদ্য জোগাতে ব্লক পদ্ধতিতে তুঁত গাছ রোপণ করা হয়েছে। আগে বাংলাদেশে তুঁত শুধুই রেশমের জন্য চাষ হতো, ফল হিসেবে নয়।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া থেকে আনা উন্নত জাতের মালবেরি চারা ব্যক্তি উদ্যোগে চাষ শুরু হয়েছে। এখন সরকারিভাবেও এই চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের নওদাবাস ব্লকের রামজিবন, ভোলার চওড়া ও নিচপাড়া এবং বড়বাড়ী ইউনিয়নের ঘোরামারা রোডের মুসার তেপুতিতে প্রদর্শনী আকারে তুঁত চাষ করা হচ্ছে।

কৃষিবিদরা জানান, অনেক জায়গায় এ ফলকে ‘ব্ল্যাক বেরি’ নাম দিয়ে চড়া দামে চারা বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে বাসাবাড়ির ছাদেও তুঁত গাছ শোভা পাচ্ছে। পাখির মধ্যেও শালিক, টিয়া, বুলবুলি ও টুনটুনির প্রিয় ফল এটি। ক্যান্সার প্রতিরোধী ও অন্যান্য ঔষধি গুণ ছাড়াও তুঁত গাছের বাকল, পাতা ও কাঠের বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে।

রেশম উন্নয়ন বোর্ডের রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র, লালমনিরহাট রাস্তার দু’ধারে ব্লক পদ্ধতিতে তুঁত গাছ রোপণ করেছে। বৃহত্তর রংপুর জেলার দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের আওতায় এসব প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।