রংপুর অঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর

রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এ বছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ মৌসুমে এ অঞ্চলে মোট পাট উৎপাদিত হয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৯২১ বেল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই মৌসুমে রংপুরে ৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর, গাইবান্ধায় ১৩ হাজার ৮২২ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ১৬ হাজার ৫০ হেক্টর, লালমনিরহাটে ৩ হাজার ৯১৫ হেক্টর ও নীলফামারীতে ৫ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।

পাটের বাম্পার ফলন ও ভালো দামের কারণে খুশি এ অঞ্চলের কৃষকরা। স্থানীয় বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি মণ (৪০ কেজি) পাট ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিঠাপুকর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বুজরুক হরিপুর গ্রামের বর্গা চাষি মো. লালটু মিয়া জানান, ১৭ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছেন। সার ও অন্যান্য খরচে ৪ হাজার টাকা খরচ হলেও তিনি বিক্রি করেছেন ৬ হাজার ৪শত টাকায়।

রংপুর সদর, বদরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাট চাষি মনসুর আলী, আফতাব মাহবুবুল ও মানিক মিয়া জানান, তারা এ বছর পাটের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। প্রতি মণ পাট মানভেদে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মৌসুম শেষে দেখা গেছে, কৃষকরা ৪৮ হাজার ৮৫৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন। এবারের আবাদ লক্ষ্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ হাজার ৮১২ হেক্টর কম হয়েছে। অধিকাংশ জমিতে উন্নত জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। তবে অন্যান্য ফসল ফলানোর কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।

তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে গত সপ্তাহ পর্যন্ত রংপুর কৃষি অঞ্চলের কৃষকরা পাটের আঁশ ছাড়ানো শেষে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৯২১ বেল পাট উৎপাদন করেছেন। মৌসুমে হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ১৩.৬৭ বেল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সদ্য শেষ হওয়া খরিফ-১ মৌসুমে ৫১ হাজার ৬৬৯ হেক্টর জমি থেকে ৭ লাখ ৯ হাজার ৭৯৯ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার।

তিনি আরও বলেন, পাটের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনতে চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. মো. আবু সায়েম জানান, সরকারের কার্যকর পদক্ষেপে এবারের মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টিপাতের কারণে বেশিরভাগ কৃষক রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ সংগ্রহ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, পাট চাষে পাটের আঁশ ও পাট খড়ি বিক্রি করে লাভবান হওয়া ছাড়াও জমি উর্বর হচ্ছে। কারণ, পাট কাটার পর তার পাতা ও শিকড় জৈব সারে পরিণত হয়ে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।