চুয়াডাঙ্গার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ, কমছে রোগী
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ
শরীফ উদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে ৮ মাস যাবত ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে করে গর্ভবতী নারী, নবজাতক, শিশু ও সাধারণ রোগীরা হয়ে পড়েছেন অসহায়। বাড়তি অর্থ ব্যয় করে ভোগান্তির শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অসহায় ও দরিদ্র মানুষরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জেলার ১২ লাখ ৩৩ হাজার সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলো থেকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত শুধুমাত্র ওষুধ না থাকায়। এক বছরের ব্যবধানে ৫৮ হাজার ১৪৯ জন রোগী হ্রাস পেয়েছে।
১৯৭৮ সালে চুয়াডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কার্যক্রম। এরপর থেকে কেন্দ্র গুলো গ্রামীণ গর্ভবতী নারী, নবজাতক, সাধারণ রোগী ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। নরমাল ডেলিভারি, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি, জীবনরক্ষাসহ নানা ধরনের চিকিৎসা ও সেবা প্রদান করা হয় নিয়মিত। তবে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে জেলার সকল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্র হাতে ধরিয়ে দিলেও প্রয়োজনীয় কোনো ওষুধ দেয়া হয় না। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে তাদের। অনেকে তা না পেরে থাকছেন চিকিৎসাবঞ্চিত।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের দেয়া তথ্য মতে, জেলার ২৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত সব ধরনের চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ২ লাখ ৯১ হাজার ৫৬০ জন। ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৪১১ জন। এক বছরের ব্যবধানে ৫৮ হাজার ১৪৯ জন রোগী হ্রাস পেয়েছে।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় কেন্দ্র গুলো রোগী শূন্য। শঙ্করচন্দ্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রতে প্রবেশ করে দেখা যায় একজন এমএলএলএস দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে সারাদিনে একজনও রোগী আসেনি। কারণ লোকবল ও প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকায় ইউনিয়নের সাধারণ মানুষরা জানেন কেন্দ্রে গিয়ে কোন লাভ নেই
স্থানীয়রা জানান, ওষুধ নিয়মিত পাওয়া যায় না। কেন্দ্রগুলো এভাবে না চালিয়ে বন্ধ করে দেয়া হোক। মানুষ যদি সেবা না পায়। ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে গরিব ও অসহায় মানুষদের টাকা খরচ করে ডাক্তার দেখানো ও ওষুধ কেনা সম্ভব নয়। চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালে গেলে টাকাও খরচ হয় অন্যদিকে সময় ব্যয় হয়। আমরা চাচ্ছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হোক।
পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক দীপক কুমার সাহা জানান, বেশ কয়েক মাস ধরে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কয়েকদিন আগে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহ করতে পেরেছি। ওষুধ আসার পর কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে। সমস্যা দূর হলে আবার রোগীরা আগের মত কেন্দ্রগুলোতে আসবে।
