ঘোড়াঘাটে খাদ্যগুদামে দুর্নীতি: ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

  দিনাজপুর প্রতিনধি

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি সরকারি খাদ্যগুদামে (এলএসডি) প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার চাল ও খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমসহ চারজনের বিরুদ্ধে দিনাজপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর  সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। 

আসামিরা হলেন– ডুগডুগি এলএসডির সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম, ঘোড়াঘাট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইউনুস আলী মন্ডল, একই গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী (বরখাস্ত) মফিজুল ইসলাম এবং কুলি সর্দার শাহিনুর আলম।

গত বছর ৯ মে আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকায় "পৌনে দুই কোটি টাকার চাল নিয়ে উধাও খাদ্য কর্মকর্তা" শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরবর্তীতে দুদক দিনাজপুর কার্যালয়ের একটি টিম ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তদন্ত চালায়। তদন্ত শেষে জানুয়ারি মাসে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রায় সাত মাস পর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদন আসে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ডুগডুগি এলএসডির দুটি খাদ্যগুদামের প্রতিটির ধারণক্ষমতা ৫০০ মেট্রিক টন। ২০২৪ সালের ২ মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসানের উপস্থিতিতে একটি তদন্ত কমিটি মজুত যাচাই করে।

তদন্তে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড অনুযায়ী দুইটি গুদামে চাল থাকার কথা ছিল ১০৬৪ দশমিক ১৫৫ টন। কিন্তু বাস্তবে পাওয়া যায় ৭৪৫ দশমিক ১৪ টন। অর্থাৎ ঘাটতি ছিল ৩১৯ দশমিক ১৪১ টন চাল, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৬৭ লাখ ৪৬ হাজার ২৫৯ টাকা। এছাড়া ৫০ কেজি ওজনের ৪ হাজার ২৭৮টি খালি বস্তাও পাওয়া যায়নি। প্রতিটি ৯০ টাকা হারে যার মূল্য ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২০ টাকা। সর্বমোট আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ২৭৯ টাকা। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি চাল ও খালি বস্তা আত্মসাৎ করেছেন। এ কাজে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। 

মামলার বাদী ও দুদকের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারি চাল ও খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।