ধর্ষণের আলামত পায়নি মেডিকেল বোর্ড, খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০২ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার ঘটনায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড পরীক্ষায় কোনো ধর্ষণের আলামত পায়নি। সদর হাসপাতালে গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীর শরীরের ভেতরে ও বাইরে ধর্ষণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। এর পরদিন পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীল নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে।

মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে থাকা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. জয়া চাকমা বলেন, ধর্ষণ প্রমাণের ১০টি সূচকের সবগুলোই স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে তার সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন আরও দুই চিকিৎসক ডা. মীর মোশারফ হোসেন ও ডা. নাহিদা আক্তার। খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. ছাবের আহমেদ জানান, এ প্রতিবেদন ইতোমধ্যে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে সেনা রিজিয়ন কমান্ডাররা অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্বত্য এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের অভিযোগকে পুঁজি করে ইউপিডিএফ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা জানান, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পেছনে ইউপিডিএফ দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

ঘটনার পর জুম্ম ছাত্র-জনতা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ডাকলেও দুর্গাপূজা ও প্রশাসনের আশ্বাসে তা আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে সহিংসতায় তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অনেকে আহত হয়েছেন। সহিংসতায় সরকারি অফিস, দোকানপাট, বসতঘর, গুদাম ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে এবং পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।