কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড়, বাঁধ সেধেছে বৈরী আবহাওয়া
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৫০ | অনলাইন সংস্করণ
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার

শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার। সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে আগামী শনিবার পর্যন্ত চারদিনের ছুটি পেয়েছেন চাকরিজীবীরা। লম্বা এ ছুটি কাটাতে সারাদেশ থেকে পর্যটকরা কক্সবাজার ছুটে আসছেন। আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের কক্ষ এর মধ্যে শতভাগ বুকিং হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
হোটেল মালিকরা জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব ও প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১২ দিনের টানা ছুটি চলছে। এই লম্বা ছুটিতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হচ্ছেন। ফলে বরাবরের মতোই ভ্রমণপিপাসুরা অবকাশযাপনে দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারেই ছুটে এসেছেন। সবমিলিয়ে এবার পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই লম্বা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশা করছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
হোটেল মালিকেরা বলছেন, মঙ্গলবার বিকেল থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। আগামী শনিবার থেকে ভরপুর পর্যটক থাকবে এখানে।
কক্সবাজার শহরের ট্রিপজোন ট্রাভেলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিকু পাল বলেন, শনিবার পর্যন্ত হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজে শতভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে।
কক্সবাজার শহর, মেরিন ড্রাইভ ও আশপাশের এলাকায় পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউজে এক লাখ ৭০ হাজার মতো পর্যটকের রাতযাপনের সুযোগ আছে বলে জানান হোটেল- মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।
তিনি বলেন, চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই আশানুরূপ পর্যটকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এটা পর্যটনের জন্য সুখবর। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সবসময় সতর্ক করা হচ্ছে, কোনো অবস্থায় যেন পর্যটক হয়রানি না হয়।
কক্সবাজার শহরের সৈকতের কলাতলী, লাবণী, সুগন্ধা পয়েন্ট গতকাল শুক্রবার থেকে পর্যটকের আনাগোনায় মুখর। শহরের তিন পয়েন্টে এখন পর্যটকে ঠাসা। পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ হয়ে অনেকে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী ও টেকনাফে সৈকতে ঘুরতে যাচ্ছেন।
কয়েকদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। সে সঙ্গে পড়ছে তীব্র গরম। বুধবার বিকেলে থেকে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। এ কারণে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত চলছে।
বুধবার বিকেলে সুগন্ধা ও লাবণী সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, উত্তাল সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতে। বৃষ্টির কারণে কেউ সৈকতে দাঁড়াতে পারছেনা। কেউ কেউ ছাতিা মাথায় দিয়ে সৈকতে নেমেছে। এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের পর্যটক সাগরে গোসলে নেমেছেন। লাইফগার্ড ও বিচ কর্মীরা পর্যটকদের নানাভাবে সতর্ক করছে।
সমুদ্র উত্তাল থাকায় সৈকতে গোসলে নামার ক্ষেত্রে নির্দেশনা অনুসরণের অনুরোধ করেছেন সী-সেইফ লাইফ গার্ডের আঞ্চলিক কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, এখন সমুদ্র উত্তাল আছে সেই সঙ্গে গুপ্তখালও তৈরি হয়েছে, তাই ঝুঁকি এড়াতে লাইফগার্ডের নির্দেশনা মানা জরুরি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, 'পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। পর্যটকরা যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।'
কক্সবাজারের সদ্য যোগদান করা জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ রয়েছে।
এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাড়তি যাত্রী চাহিদা মেটাতে ঢাকা-কক্সবাজার ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ৪ জোড়া ‘পূজা স্পেশাল’ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ৩ জোড়া এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ১ জোড়া ট্রেন চলবে।
