দিনাজপুরে মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সাফল্য রবিউলের
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
সিদ্দিক হোসেন, দিনাজপুর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে এবার চাষিরা লাভবান হয়েছেন। মাত্র ৭০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে তরমুজ উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা স্বল্প সময়ে ভালো আয় করছেন। কৃষি বিভাগ মনে করছে, মাচা পদ্ধতি জনপ্রিয় হলে এ অঞ্চলের কৃষি ও অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০ শতক জমিতে মাচা তরমুজ চাষ হয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে কৃষকদের বীজ, সার ও আংশিক নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে কৃষি বিভাগ ‘মার্সেলো গোল্ড’ ও ‘রঙ্গিলা’ জাতের তরমুজের বীজ সরবরাহ করে।
চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের চাষি রবিউল ইসলাম জানান, তিনি ২০ শতক জমিতে ‘মার্সেলো গোল্ড’ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। মাচা তৈরি ও পরিচর্যার জন্য তার প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে বাঁশের মাচা তৈরি করতে লেগেছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা, কীটনাশক খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা এবং বাকি খরচ গেছে শ্রমিক ও সার বাবদ।
রবিউল ইসলাম বলেন, “৭৫ দিনের মাথায় আমি প্রথম দফায় ১৫ থেকে ১৬ মণ তরমুজ বিক্রি করেছি। প্রতি মণ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দামে বিক্রি হওয়ায় ভালো লাভ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আরও ১০ মণ এবং তৃতীয় দফায় কিছু তরমুজ বিক্রির আশা করছি। সব মিলিয়ে ২০ শতক জমি থেকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি সম্ভব। অল্প সময়ে এত লাভ আমাদের পরিবারের জন্য স্বস্তি এনেছে।”
বাজারের এক তরমুজ ব্যবসায়ী বলেন, “একসময় দিনাজপুরে তরমুজ বাইরে থেকে আনতে হতো। এখন চিরিরবন্দর ও আশপাশের উপজেলায় মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ হওয়ায় আমরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দামে কিনতে পারছি। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। ফলে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছি।”
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আফজাল হোসেন বলেন, “দিনাজপুরের কৃষকদের স্বাবলম্বী করতে কৃষি বিভাগ নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা যেন প্রতিটি ফসলে স্বাবলম্বী হতে পারে, সেই লক্ষ্যেই আমাদের কাজ।”
