গরুর মাংস কিনতে গিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আটক ৩

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুর শহরের ব্যস্ততম বিপনীবাগ বাজারে গরুর মাংসের সাথে হাড্ডি চর্বি দিয়ে বিক্রি করার প্রতিবাদ করায় ক্রেতার উপর হামলার ঘটনায় তিনজনকে চাঁদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার(৪ অক্টোবর)সন্ধ্যা প্রায় ৮টার সময়। হঠাৎ মাংস কেনাকে কেন্দ্র করে ঘটে যায় ভয়াবহ সংঘর্ষ, যা মুহূর্তের মধ্যে রক্তাক্ত ঘটনায় রূপ নেয়।

আটককৃতরা হলেন— সোহাগ, ইমাম ও রাজন।

ভুক্তভোগী এমদাদ প্রধানীয়া, বয়স সাতষট্টি। তিনি একজন ব্যবসায়ী। ঘটনার দিন তিনি পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নিয়ে বিপদীবাগ সোহাগ নামের এক কসাইয়ের দোকান থেকে চার কেজি গরুর মাংস কিনতে যান। দাম ধার্য হয় প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা।

কিন্তু অভিযোগ ওঠে, মাংসের সাথে গোপনে প্রায় দুই কেজি চর্বি ও হাড় মিশিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি টের পেয়ে এমদাদ প্রধানীয়া প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত কসাই সোহেল তাঁকে ধাক্কা দেন। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

তাৎক্ষণিকভাবে এমদাদের ছেলে ঢাকা উত্তরার মাই টিভির সাংবাদিক শাহজালাল জুয়েল এগিয়ে আসলে, সাগর বকাউল নামে আরেকজন তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় আরও কয়েকজন মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ চালায়। হামলায় আহাদ নামে এক ব্যক্তি চাপাতির কোপ থেকে বাঁচতে গিয়ে হাত ও মুখে গুরুতর জখম হন। অন্যদিকে রাহিম হোসেনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে তার পিঠে রক্তাক্ত করা হয়।

শুধু তাই নয়, পরিবারের নারী সদস্যদের ওপরও হামলা চালানো হয়। তাদের কিল-ঘুসি মেরে শারীরিক আঘাত করা হয়। এমনকি শ্লীলতাহানির অভিযোগও ওঠে। হামলার সময় এক নারীর গলা থেকে সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার মূল্য প্রায় এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা।

বাজারে উপস্থিত লোকজন চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তবে আটককৃতরা দাবি করেছে, মাংসে কিছু হাড় থাকায় ক্রেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে ঝগড়ায় জড়ান। তারা অভিযোগ করেন, টাকা বা সোনা কেউ নেয়নি।

এই ঘটনার পর স্থানীয় বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এখানে একটি সাধারণ কেনাকাটা কীভাবে বড় সংঘর্ষে রূপ নেয়, তা দেখে হতবাক শতশত বাজারে আসা মানুষ।