ছেলে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি মা
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নে আলোচিত কামরুল হাসান কাউসার (২১) হত্যা মামলায় নিহতের মা হামিদা বেগমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
নিহত কাউসারের নানী ফরিদা বেগম বাদী হয়ে ভূজপুর থানায় নিজ মেয়েকে (হামিদা বেগম) নাতি হত্যার প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ঘটনার দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হামিদা বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আদালতে সোপর্দ করে। ভূজপুর থানার ওসি মাহবুবুল আলম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত কাউসারের নানী ফরিদা বেগম বলেন, সে (হামিদা) মা হয়ে ছেলেকে হত্যা করেছে, এমন জঘন্য কাজ পৃথিবীতে আর হতে পারে না। স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে সে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। করিম নামের এক সিএনজি চালকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। আমরা আগেও সন্দেহ করেছিলাম, কিন্তু মেয়ে বলে চুপ ছিলাম। এখন নিশ্চিত হয়েছি সেই করিমের সাথেই আমার মেয়ের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল।
ফরিদা বেগম আরও জানান, আমার নাতিকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তারা তাকে (কাউসার) বৈদ্যুতিক শক দিয়ে, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে, পিটিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যা করেছে। পুলিশের সামনেই সে (হামিদা) সব স্বীকার করেছে।
এদিকে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন নিহতের বাবা কামাল ভুঁইয়া। তিনি ঘটনার পরদিন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরে আসেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ওই সিএনজি চালক করিমের সঙ্গে আমার স্ত্রীর আচরণে অনেক আগেই সন্দেহ হয়েছিল। কিছু বললে বলতেন আত্মীয়। আমি ওর ওপর কঠোর হতে পারিনি, কারণ ছেলে সন্তানের মান-সম্মানের কথা ভেবে চুপ থেকেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে আমার একমাত্র সন্তানকে হত্যা করল। সে মা হয়ে কিভাবে সন্তানকে খুন করতে পারে? আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, নিহতের নানী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। প্রধান আসামি হামিদা বেগমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, যা তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। দোষীদের কেউই ছাড় পাবে না।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে ভূজপুর থানা পুলিশ নারায়ণহাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইদিলপুর বাউদ্দার পাড় এলাকার পণ্ডিত বাড়িতে নিজের শয়নকক্ষ থেকে কামরুল হাসান কাউসারের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহজনকভাবে তার মা হামিদা বেগমকে আটক করে পুলিশ।
