গাজনার বিলে সড়ক উন্নয়নে বদলে গেছে ১০ গ্রামের চিত্র

পাবনার গাজনার বিল এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বদলে গেছে ১০ গ্রামের চিত্র। প্রশস্ত আধুনিক সড়কে গাজনার বিলের প্রায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমির ফসল পরিবহন ও বাজারজাতকরণের ভোগান্তি কমেছে কৃষকের। সহজেই বাজারজাত করা যাচ্ছে ফসল।

এতে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের পাশাপাশি ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে এলাকার কৃষি ও আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রচেষ্টায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৮ ফুট প্রশস্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাকা সড়কে বদলে গেছে ১০ গ্রামের চিত্র।

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি মৎস্য ও কৃষিপণ্যের এক সুবিশাল ভান্ডার পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিল। গ্রীষ্মে পাট উত্তোলনের পর বর্ষার পানিতে ভরপুর বিলের জলে মেলে সুস্বাদু প্রাকৃতিক মাছ, চাষ হয় আমন ধানও। বর্ষা শেষেই বিলের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে হাজার হাজার বিঘা জমিতে চাষ হয় অর্থকরী ফসল পেঁয়াজ।

গাজনার বিলের মানিকহাট থেকে বিন্যাডাঙি পর্যন্ত পূর্বে সংকীর্ণ বেহাল সড়কে কৃষিপণ্য পরিবহন নিয়ে ভোগান্তি পোহাতেন স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসি। তবে সদ্য নির্মিত প্রশস্ত সড়কে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এখন গ্রামের বাজারেই বসছে হাট। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

গাজনার বিল এলাকার সড়কটি কৃষি অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে আর্থ-সামাজিক খাতেও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপস্থিতি বেড়েছে, বাল্যবিবাহ কমেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যোগাযোগ সহজ হওয়ায় দুর্গম গ্রামগুলোতে অপরাধীদের তৎপরতাও কমেছে।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. রাফিউল ইসলাম বলেন, সড়ক হওয়ায় কৃষকদের ভোগান্তি কমেছে এবং তারা সরাসরি বাজার পাচ্ছেন।

পাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, গাজনার বিলে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ, ধান ও পাটসহ অর্থকরী ফসল আবাদ হয়। তবে যোগাযোগব্যবস্থা তেমন উন্নত না থাকায় কৃষিপণ্য ক্ষেত থেকে বাজারজাত করতে প্রতিবন্ধকতা ছিল।

এই সমস্যার সমাধানের জন্য ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সড়কটি নির্মাণ করা হয় এবং চলতি বছর এটি উন্মুক্ত করা হয়েছে।

কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে পাবনার অন্যান্য কৃষিপ্রধান গ্রামে উন্নতমানের প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ পরিকল্পনায় রয়েছে।