
রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের জোনাল অফিসে মেয়াদোত্তীর্ণ বীমার টাকা না পাওয়ায় গ্রাহকদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও অফিস অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার সকাল থেকে শহরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে শত শত ক্ষুব্ধ গ্রাহক রাস্তায় নেমে আসেন। তারা সড়ক অবরোধ করে কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহকের বকেয়া পাওনার পরিমাণ প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার গভীর রাতে অফিস থেকে ট্রাকে করে মালামাল সরানোর খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রাহকরা ছুটে আসেন। তারা অফিসের সামনে ট্রাক আটকিয়ে জোনাল অফিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) আব্দুল কাদের বীরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
বিক্ষুব্ধ গ্রাহক খোরশেদ আলম, আব্দুল হাকিম ও হুমায়ুন কবির অভিযোগ করেন, “বছরের পর বছর ধরে বীমার মেয়াদ শেষ হলেও আমরা টাকা পাচ্ছি না। অথচ অফিস হঠাৎ রাতের আঁধারে মালামাল পাচার করছে, যা প্রতারণার ইঙ্গিত দেয়। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”
এ বিষয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের এসভিপি আব্দুল কাদের বীর বলেন, “আমরা পুরনো আসবাবপত্র বিক্রি করছিলাম নতুন অফিসে স্থানান্তরের প্রস্তুতি হিসেবে। ভুল বোঝাবুঝির কারণেই গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়েছেন। কোম্পানির পর্যাপ্ত সম্পদ রয়েছে, যা বিক্রি করেই গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের অনেক সম্পদ দখল হয়ে গিয়েছিল। এখন সেগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় পুনরুদ্ধার করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ চলছে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) রমিজ আলম বলেন, “এই অফিসের আওতায় প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহকের বকেয়া পাওনা প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে দ্রুত টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “অফিস থেকে সরানোর চেষ্টা করা মালামাল আপাতত এখানেই থাকবে। প্রশাসন নিশ্চিত করবে, কোনো সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়া যেন শুরু না হয়। শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মকর্তাদের কোনো আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ অব্যাহত রাখেন। তাদের দাবি— টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।