জুলাই সনদে বিএনপির স্বাক্ষরিত পাতা নেই: রিজভী
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১৯ | অনলাইন সংস্করণ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ বিএনপির স্বাক্ষরিত কোনো পাতা নেই, অথচ অন্য পাতা সংযুক্ত করে ঐকমত্য কমিশন সনদ জমা দিয়েছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলা বাড়িয়া গ্রামে জন্মান্ধ গফুর মল্লিকের পাশে দাঁড়াতে যান ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর একটি প্রতিনিধি দল।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি গফুর মল্লিকের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, “আমরা এখানে কোনো মিছিল-মিটিং করতে আসিনি, ভোট চাইতেও আসিনি। এটি একটি রাজনৈতিক দলের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করা উদ্যোগ। তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশে আমরা সারা দেশেই এমন মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকি।”
তিনি আরও বলেন, “দেশ এক ভিন্ন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী আমল, গুম-খুনের আমল, বিরোধী কণ্ঠরোধের আমল— আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে সেই ভয়াবহ সময় থেকে বেরিয়ে এসেছি।”
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “সনদে বিএনপির স্বাক্ষরিত কোনো পাতা নেই। অন্য পাতা সেখানে যুক্ত করে জমা দেওয়া হয়েছে— এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও প্রতারণামূলক কাজ। জনগণের সঙ্গে এমন প্রতারণা চলতে পারে না।”
রিজভী বলেন, “ড. মোহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত সরকার ও কমিশনের কর্মকাণ্ডে জনগণ আস্থা রেখেছিল। কিন্তু কমিশনের ভেতর থেকে এমন প্রতারণামূলক ঘটনা ঘটবে, মানুষ তা বিশ্বাস করতে পারছে না।”
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, “জুলাই সনদে ৪৭ থেকে ৪৮টি ধারা রয়েছে। এর মধ্যে বলা হয়েছে, দুই কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের কথা, যা আমাদের সংবিধানের এককক্ষ বিশিষ্ট সংসদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “যদি বলা হয়, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ পার্লামেন্টে পেশের পর ২৭০ দিনের মধ্যে পাশ না হলে তা অটোপাশ হবে, তাহলে এত আলোচনা, গণভোট, নির্বাচন, এসবের প্রয়োজন কী? পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন নজির নেই। এটি এককেন্দ্রিক, একদলীয়, কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে হতে পারে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যে দেশের তরুণরা, আবু সাঈদ, শুভ, ওয়াসিম, গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জনগণের ঐক্যের ভিত্তিতে এমন ভেজাল ও প্রতারণামূলক জুলাই সনদ গ্রহণযোগ্য নয়।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব কৃষিবিদ মকছেদুল মোমিন মিঠুন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজবাড়ী-১ বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মো. আসলাম মিঞা, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল আলম, এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হারুন অর রশিদসহ বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
