
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। এই তালিকায় রংপুরের ৩৯ বছর আগে হারানো ছয়টি সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন স্থানীয় ছয় নেতা।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
রংপুর-১ আসনে অংশ নেবেন গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সদস্য মোকাররম হোসেন সুজন। এই আসনটি গঙ্গাচড়া ও সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রার্থী মশিউর রহমান যাদু এই আসনে জয়লাভ করেন। মোকাররম হোসেন সুজন বলেন, বিএনপি স্থানীয় পর্যায়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়, ভোটাররা নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পারে, তাহলে বিএনপির জয় নিশ্চিত।
রংপুর-২ আসনে লড়বেন সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার। তিনি ২০০১ সালে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট দেন; পরে বিএনপিতে যোগ দেন। আসনটি বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭৯ সালে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী মোহম্মদ ইলিয়াছ জয়ী হন।
রংপুর-৩ আসনে ধানের শীষ নিয়ে লড়বেন সামসুজ্জামান সামু, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক। আসনটি সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। স্বাধীনতার পর এই আসনে বিএনপি কেবল একবার জয়ী হয়েছে।
সামসুজ্জামান সামু জানান, নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য গণসংযোগ শুরু করেছেন এবং আশা করছেন বিএনপি রংপুরে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে।
রংপুর-৪ আসনে লড়বেন কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি এমদাদুল হক ভরসা। আসনটি কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭৯ সালে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী শিল্পপতি রহিম উদ্দিন ভরসা জয়ী হয়েছিলেন।
এমদাদুল হক ভরসা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে এই আসনের মানুষ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আসনটি পুনরুদ্ধার সম্ভব।
রংপুর-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রব্বানী। আসনটি মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে আসনটি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দখলে ছিল।
অধ্যাপক গোলাম রব্বানী জানান, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। এবার দলীয় সমর্থনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে চান।
রংপুর-৬ আসনে লড়বেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। আসনটি পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। দীর্ঘদিন ধরে আসনটি জাতীয় পার্টি ও পরে আওয়ামী লীগের দখলে ছিল।
সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং ভোটারদের স্বচ্ছ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে বিজয় নিশ্চিত।