পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, বিজিবির প্রতিবাদ

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে চোরাকারবারি তৎপরতা সন্দেহে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বলে স্থানীয় ও বিজিবি সূত্র জানিয়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার ভোরে পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পকেট সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। আকস্মিক গ্রেনেড বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে সীমান্তবর্তী বাড়িঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সীমান্তবর্তী অনেক মানুষ বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম থেকে জেগে পরিস্থিতি বুঝতে না পেরে উৎকণ্ঠায় পড়ে যান।

স্থানীয় সীমান্ত সূত্র ও বিজিবি জানান, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বিপরীতে ভারতের কোচবিহার রাজ্যের মেখলিগঞ্জ থানার সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম ভেল্কু লতামারী। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মেইন পিলার ৮৫৪ নম্বরের সাব পিলার ৩ এর এলাকার শূন্যরোখায় রতনপুর ক্যাম্পের টহল দলের বিএসএফ সদস্যরা বুধবার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। এতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

ঘটনার পর বুড়িমারী বিজিবি কোম্পানি ও শ্রীরামপুর বিওপি ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সীমান্তে পতাকা বৈঠক আহ্বান করা হলে বিজিবি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়।

বৈঠকে বিজিবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করার অংশ এবং বিএসএফকে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সমন্বয় ও যোগাযোগ জোরদার করতে হবে।

অন্যদিকে বিএসএফ বলেছে, ঘটনার স্থানীয় সীমান্তে সাত থেকে আট জনের একটি গরু চোরাকারবারির দল ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং তাদের ধাওয়া দিতে বাধ্য হয়ে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভবিষ্যতে সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন ঘটনা এড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে। বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে বলে বিজিবি নিশ্চিত করেছে।

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বলেন, তিনি ঘটনা শুনেছেন এবং ইতিমধ্যে বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয়েছে; বিজিবি ওই বৈঠকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। বৈঠকে ভারতের পক্ষে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন রতনপুর ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর রনজিত মালি, বাংলাদেশের পক্ষে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন শ্রীরামপুর ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার মোক্তার হোসেন।

সীমানায় বিএসএফকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে—যদি কোনো ধরনের চোরাচালানি তৎপরতা দেখা যায়, তারা বিডিকে তৎক্ষণাত জানাবে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়। কোনো অবস্থাতেই সীমান্তে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করা যাবে না বলেও সভায় বলা হয়েছে।