সিরাজগঞ্জে লতিফ হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ২১:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের সলংগা থানার চর ফরিদপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ (৪০) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে ডিবি পুলিশ। প্রবাসী চাচাতো ভাই মতির স্ত্রী শাহীনুর খাতুনের সাথে ওই গরু ব্যবসায়ী ও তার ছোট ভগ্নিপতি রফিকুলের পরকীয়ার জেরে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত নারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তারা হলেন— ওই গ্রামের মাসুদ রানা (৩৮), ফরিদুল ইসলাম (৪২), প্রবাসীর স্ত্রী শাহিনুর খাতুন (৪০) ও দোস্তপাড়া গ্রামের নিহতের ভগ্নিপতি রফিকুল ইসলাম (৪০)।

ওসি (ডিবি) আবু সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ওই গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে গরু ব্যবসায়ী লতিফ গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ৩ দিন পর সকালে একই এলাকার ফুলজোড় নদী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার ক্লুলেস এ মামলার রহস্য উদঘাটনে একটি চৌকস তদন্ত টিম গঠনের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশে গঠিত তদন্ত টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হন। সোমবার রাতে ডিবির এসআই নাজমুলের নেতৃত্বে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মঙ্গলবার বিকেলে তারা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যর অনুযায়ী, ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে গরু ব্যবসায়ী লতিফের প্রায় ২ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এ সম্পর্ক চলাকালে শাহীনুরের কাছ থেকে ব্যবসার জন্য ২ লাখ টাকা ধার নেয় লতিফ এবং কিছুদিন পর শাহীনুর পাওনা টাকা ফেরত চাইলে লতিফ টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় ছোট ভগ্নিপতির সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন শাহীনুর। তাদের পরকীয়া প্রেমের পথের কাঁটা লতিফকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহীনুর ও রফিকুল। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদ ও ফরিদুলকে ভাড়া করেন শাহীনুর। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার দিন প্রবাসীর স্ত্রী নিজেই লতিফকে নদীর ঘাটে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অন্যান্য আসামিরা অবস্থান করছিল। এ সময় তাকে ঘুমের ওষুধ মেশানো কোমল পানীয় পান করানো হয়। এতে সে ঘুমিয়ে পড়লে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ওই নদীতে ফেলে দেয়।

এদিকে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাত্র ৬ দিন পর রহস্য উদঘাটন করায় ডিবি পুলিশ এলাকায় প্রশংসিত হয়েছেন।