শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছে: নোয়াখালীতে বুলু

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:২২ | অনলাইন সংস্করণ

  নোয়াখালী প্রতিনিধি

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী এবং নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বরকতউল্লাহ বুলু বলেছেন, “শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন। আর এ কারণেই জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল মানুষের কাছে জনপ্রিয় দল।”

তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে পাকবাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি মেজর জানজুয়াকে হত্যা করে বিদ্রোহী হন এবং বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেন। আমি মেজর জিয়া বলছি—বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে রণাঙ্গনে যুদ্ধ শুরু করেন। তীর রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের পরিবর্তনের বিপ্লবের মাধ্যমে আবার জিয়াউর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।”

বুধবার রাতে নোয়াখালীতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ধানের শীষের পক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হক এবং সঞ্চালনা করেন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান।

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ কোনোদিনই একশ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারত না, যদি ১৯৯৬ সালে জামায়াত তাদের সহযোগিতা না করত। জামায়াত বারবার নানা দলের সঙ্গে জোট করে প্রতারণা করে। এখন আবার পিআর গণভোট নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নোয়াখালী-৫ আসনের বিএনপির প্রার্থী ফখরুল ইসলাম বলেন, বিগত সময়ের একটি মামলার প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানান, “ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আমার একটি মামলায় জামিন চাইছিলেন, কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমাকে জামিন দেওয়া হয়নি। গত ১৭ বছর আমাদের নেতাকর্মীদের ঠিকানা ছিল আদালত আর জেলখানা। আইনজীবীরা আমাদের পাশে ছিলেন এবং আগামীতেও আমি আইনজীবীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “আজ তারা ইতিহাস বিকৃত করে নিজেদের সুবিধামতো গল্প সাজাতে চাইছে। আওয়ামী লীগ কখনো ন্যায়–অন্যায়, গণতন্ত্র–স্বৈরশাসন এসব বিবেচনা করেনি। তাদের লক্ষ্য ছিল শুধু ক্ষমতা এবং ক্ষমতার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। এ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছর বিএনপির উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। গণতন্ত্র নামক বৃক্ষকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলেছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বিএনপি শুধু রাজনৈতিক দল নয়—জনগণের অধিকার রক্ষার শেষ আশ্রয়স্থল। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপি জনগণের অধিকার রক্ষায় লড়াই করছে। দলমত নির্বিশেষে মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা জানে, বিএনপি ছাড়া কেউই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবে না।”

নোয়াখালী-৫ আসনের বিএনপির এই প্রার্থী আরও বলেন, “আজ যারা দেশ পরিচালনা করছে, তারা সবকিছুতেই ব্যর্থ। অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, ব্যাংক খাত লুট হয়ে যাচ্ছে, দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে, দেশে ন্যায়বিচার নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সংকট নিরসনে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রয়োজন।”

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম, নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো, সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আলো, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।