লালমনিরহাটে তীব্র শীতে অসহায় ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

তীব্র শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়া বইছে সর্ব উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে। এ জেলার তাপমাত্রা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে পালা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শীতবস্ত্রের অভাবে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল ও দিনমজুর শ্রেণীর হাজার হাজার মানুষ অসহায় জীবন-যাপন করছেন।
জানা গেছে, হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হওয়ায় বরাবরই লালমনিরহাটে আগেভাগেই শীতের প্রভাব পড়ে।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহজুড়ে তাপমাত্রা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে সন্ধ্যার পর হিমেল হাওয়া যুক্ত হওয়ায় শীতবস্ত্রের অভাবে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল ও দিনমজুর শ্রেণীর হাজার হাজার মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীরাও বিপাকে পড়ছে। বিশেষ করে শীতবস্ত্রের অভাবে এসব মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগীরা। সন্ধ্যার পর ঘন কুয়াশার সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা বাতাসে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষসহ সব প্রাণী। মানুষ, জীবজন্তু এবং ফসলের ক্ষেতেও এর প্রভাব পড়েছে।
শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখি। ঘন কুয়াশায় ফসলের ক্ষেতেও বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। কৃষকরা আলুসহ সব সবজি ক্ষেতে এবং বিভিন্ন বীজতলায় শীত-সহনীয় কীটনাশক স্প্রে করছেন, কিন্তু ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না।
গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন খামারি ও কৃষকরা। শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা। জেলার ৫টি সরকারি হাসপাতালেই রোগীর ভিড় বেড়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী আসছেন সব হাসপাতালে। আন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানান ঠান্ডাজনিত রোগ সহজে ছাড়ছে না।
জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। নভেম্বর মাসেই রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিটি হাসপাতালে শুধু বহিঃবিভাগেই দৈনিক পাঁচ-ছয় শ রোগী আসছেন, যাদের অধিকাংশই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা বিতরণ করা হবে।
আদিতমারী উপজেলা হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আজমল হক জানান, হাসপাতালে সপ্তাহের ছয় দিনই রোগী দেখা হয়। নভেম্বর মাস শুরু থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখতে হচ্ছে। শীত বাড়ায় শিশুরা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। হাসপাতালে আসা অধিকাংশ শিশু নিউমোনিয়ায় ভুগছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে গ্যাস দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
