ঈশ্বরদীতে জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ: পাল্টাপাল্টি মামলা ও বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৪১ | অনলাইন সংস্করণ

  ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার ঈশ্বরদীতে গত বৃহস্পতিবার বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর দুই দল পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। 

রোববার (৩০ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. স. ম. আব্দুন নুর। এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে মামলা দুটি নথিভুক্ত হয়েছিল।

ওসি জানান, সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধার ছেলে বাঁধন হাসান আলিম ৩২ জন জামায়াত নেতার নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেছেন। এছাড়া আরও ১৫০ থেকে ২০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও পাবনা-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলকে।

অপরদিকে, ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম ৩৮ জন বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধাকে। এছাড়া ১০০ থেকে ১৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ পাবনা-৪ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের আত্মীয় ও অনুসারী।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় ঈশ্বরদী উপজেলার চর গড়গড়ি গ্রামে জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে অনেক নেতা-কর্মী এলাকা থেকে সরে পড়েছেন।

এদিকে শনিবার বিকেলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব পাবনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘জামায়াতের লোকজন গ্রামের মহিলা ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। এতে জনতা তাদের প্রচারণার প্রতিবাদ করেছে। তারা চর গড়গড়ি গেলে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করে। একপর্যায় তারা স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপি সমর্থকদের ওপর গুলি চালায় এবং হামলা চালায়।’

হাবিব আরও জানান, ‘তুষার নামের একজন জামায়াত কর্মী, যিনি মনোনীত প্রার্থী তালেবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ধরেছিলেন। একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় বিএনপির ১১ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’

অন্যদিকে একই দিন বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতে ইসলামী তাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।

জামায়াত নেতারা দাবি করেছেন, ‘হামলায় আমাদের ৫০ জনের বেশি সদস্য আহত হয়েছেন। পাশাপাশি শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল বলেন, ‘যে ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছিল, তাকে চিনি না। এটি আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সমর্থকেরা আমাদের লোকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এখন তারা আমাদের দোষারোপ করছে।