চবিতে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আটক ১
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:২৩ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। জানা যায়, জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসা সুমন চাকমা নামে এক ব্যক্তি মদ তৈরির কারখানা পরিচালনা, বন্যপ্রাণী শিকার এবং অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। এসব অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আটক করে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে তাকে আটক করা হয়।
অভিযানের সময় বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত জব্দ করে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় মামলা দায়ের করে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গ্রীনহাউসের ব্রিজের ঠিক উত্তর পাশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিজ নেওয়া বখতিয়ার ফকিরস্থ জমিতে প্রায় ১৫ বছর ধরে বসবাস করছিলেন সুমন চাকমা। একটি ছোট বেড়ার ঘরকে তিনি বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করতেন। ঘরের পেছনে তাঁতকরা কাঠামোয় গড়ে তুলেছিলেন চোলাই মদ তৈরির কারখানা।
সম্প্রতি বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস ফ্যাকাল্টির পুকুরপাড়ে বহিরাগতদের সন্দেহজনক যাতায়াত এবং শিক্ষার্থীদের একটি অংশের নিয়মিত উপস্থিতি নজরে আসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। গোপনে অনুসন্ধানের পর মদের ব্যবসা ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বন্যপ্রাণী শিকারের তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
চবি সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানান, সোমবার রাতে প্রক্টর স্যার, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুপারভাইজার নুরুদ্দীন ও মহিউদ্দিনসহ সাত–আটজন সদস্যের একটি দল অভিযান চালিয়ে সুমন চাকমা এবং তার সঙ্গে থাকা এক নারীকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ওই নারী তাঁর স্ত্রী নন।
অভিযানস্থল থেকে একটি ড্রামে সদ্য প্রস্তুত ৩০ লিটারের বেশি মদ, ৫ লিটারের একটি ডেক্সি, বোতলভরা ৫ লিটার প্রস্তুত মদসহ বড় আকারের মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মদ বিক্রির হিসাবের খাতা, সরঞ্জাম ও অন্যান্য আলামতও জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সুমন চাকমা বন্য শুকর, হরিণ, বন্য মুরগিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকারের কথাও স্বীকার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার জঙ্গল থেকে শিকার করা মাংস তিনি বাইরে বিক্রি করতেন বলেও জানান। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর একটি গ্রুপ তার কাছ থেকে নিয়মিত মদ কিনত বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন এবং অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। লিজ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে অবৈধ ও অননুমোদিত ব্যবসা পরিচালনার কারণে সংশ্লিষ্ট লিজ বাতিলের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।
