বিদ্যালয় ভবন নির্মাণকালেই ফাটল, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

তারা বলেন, নিচ তলা ও দ্বিতল ভবনের কাঠের দরজাগুলো একেবারেই নিম্নমানের। শুধু তাই নয়, জালনার প্লেন সিট ও স্কয়ার বার শিডিউলে অনুযায়ী সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। বারান্দার রেলিং হস্তান্তরের আগেই নড়বড়ে হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ক্লাসরুম নির্মাণ ও আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে।

স্থানীয়রা দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) কারিগরি সহায়তায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৬ হাজার ৩৮৫ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে মেসার্স এসই এবং তোফাজ্জল জেবি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

কাজ শুরু হয় ২০২৪ সালের ১৩ মে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। কাজ শেষ না হওয়ায় ৯ মাস সময় বাড়ানো হলেও কাজের গতি সন্তোষজনক নয়।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কাজ চলাকালেই ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। তারা মৌখিকভাবে প্রকৌশলীকে জানিয়েও তা আমলে নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন। তারা আশা করেন, ভবনটি নিরাপদ করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সোহেল রানা বলেন, ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল দেখা গেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে নির্মাণ কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল।

তবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল আলিম কাজ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তার মতে, ব্লক দিয়ে করা কাজে এ ধরনের ফাটল স্বাভাবিক। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান উপজেলার প্রকৌশলী কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. বুলবুল হোসেন ফাটলের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ভবনের তিনটি কক্ষের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছিল, যা রঙের পুটিন দিয়ে মেরামত করা হয়। তবে মেরামতের পরেও ফাটল আবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসান বলেন, ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।