চাঁদপুরে টেকনোলজিস্ট-ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড দাবিতে কর্মবিরতি

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (সকল) ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে চাঁদপুরে ৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে আগত রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়।

কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের প্যাথলজি সেকশন ও ওষুধ কাউন্টারে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

নেতৃবৃন্দ জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টগণ রোগ নির্ণয় ও ওষুধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। স্বাস্থ্যসেবা একটি “টিম ওয়ার্ক”, যার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় চিকিৎসক-নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।

করোনা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া—যেকোন মহামারিতেই রোগ নির্ণয়, নমুনা সংগ্রহ, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপি, ফিজিওথেরাপি, ডেন্টালসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অপরিসীম।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ফার্মাসিস্টরা মেডিসিন স্টোর ব্যবস্থাপনা, ওষুধের চাহিদাপত্র প্রস্তুত, সংরক্ষণ, মান নিয়ন্ত্রণ ও বিতরণসহ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই পেশায় দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী সমস্যা থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, ডিপ্লোমা নার্স, ডিপ্লোমা কৃষিবিদরা ইতোমধ্যেই ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। অথচ সমশিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য দাবি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

১৯৮৯ সাল থেকে এই পেশাজীবীদের ১০ম গ্রেডের দাবিটি সরকার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার উপস্থাপন করা হলেও বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনো নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা।

চরাঞ্চল থেকে আগত রোগী রহিমা বেগম ও মর্জিনা বেগম বলেন, “সকালে ট্রলারে করে হাসপাতালে এসেছি। সকাল ১০টা থেকে টেস্টের জন্য বসে আছি। কর্মবিরতির কারণে কোন টেস্ট করাতে পারছি না। আজ রিপোর্ট দেখাতে পারবো না—আবার কালকে আসতে হবে।”

জায়েদা বেগম ও নার্গিস বেগম জানান, “ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু ওষুধের জন্য দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।”

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মালেক মিয়াজী বলেন, “সারাদেশে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ৪ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন হয়েছে। আমাদের দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন পালন করা হবে।” তবে রোগীদের দুর্ভোগের জন্য তিনি দুঃখও প্রকাশ করেন।

এসময় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।