দেশের উন্নয়নে মেধাবীদের কাজে লাগাতে হবে: চসিক মেয়র
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো

দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে দেশের শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার পাশাপাশি প্রবাসে থাকা মেধাবী বাংলাদেশিদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শনিবার মেরিন ফিশারিজ একাডেমির হল রুমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কলেজ শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত শিক্ষক প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন মেয়র।
অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, প্রবাসে থাকা মেধাবী বাংলাদেশিদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে দেশের অগ্রযাত্রায় যুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে মেয়র বলেন,
“দেশের বাইরে বসবাসরত আমাদের তরুণ প্রজন্ম উন্নত বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, গবেষণা ও উদ্ভাবনী ধারণার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। তাদের এই অর্জিত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দেশে ফিরে বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশ আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে। সেজন্য তাঁদের উৎসাহিত করতে হবে যেন তারা বিদেশে শুধু কর্মজীবনে সীমাবদ্ধ না থেকে আধুনিক প্রযুক্তি শেখে, জ্ঞান সঞ্চয় করে এবং সেই জ্ঞান নিজেদের মাটিতে প্রয়োগ করে জাতিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।”
মেয়র আরও বলেন, “আমি যেখানে যাই, শিক্ষা খাত নিয়ে কিছু না কিছু করার চেষ্টা করি। সম্প্রতি আমি লন্ডন সফর করেছি; এর আগে কানাডা গিয়েছিলাম। কানাডা সফরে সেখানে নার্সিং শিক্ষা ও নার্সিং ইনস্টিটিউশনের দ্রুত বিস্তারের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি, কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে এ খাতটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। লন্ডনেও হেলথকেয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা নিয়েছি। এসব বিষয় আমাদের দেশের তরুণদের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। যদি ধীরে ধীরে এই কোর্সগুলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীনস্থ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে দেশে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী গড়ে তোলা সম্ভব হবে এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারেও তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।”
শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে নেওয়া পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মেয়র আরও বলেন, “আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর স্কুল হেলথ কার্ড চালু করেছি, বহু শিক্ষককে স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছি এবং বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নতুন একাডেমিক ভবন পেয়েছে। আপনাদের পক্ষ থেকে যে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আমাকে জানানো হয়েছে—তার অনেকগুলো পূরণ করতে পেরেছি। তবে কিছু দাবি আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে পূরণ করা সম্ভব হয়নি। পূর্বে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর কোনো উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ ছিল না, যার ফলে সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক সক্ষমতা সংকুচিত ছিল। এখন কিভাবে প্রতিষ্ঠানকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা যায়, সে বিষয়ে কাজ করছি। বন্দরের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং রাজস্ব আদায় বাড়াতে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা। সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল। সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাজিব সাহার সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সমিতির প্রতিবেদন পাঠ ও শিক্ষকদের পক্ষে দাবিনামা উপস্থাপন করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ কর, অনুষ্ঠান প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক জহিরুল কাইয়ুম চৌধুরী, কুলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হক খান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ শেখ মোহাম্মদ ওমর ফারুক, শিক্ষক নেতা আবুল খায়ের, শরাবান তহুরা, ইঞ্জিনিয়ার প্রবাল রক্ষিত, মেয়রের উপদেষ্টা শাহরিয়ার খালেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চসিক স্কুল শিক্ষক সমিতির সভাপতি আখতার হোসেন, চসিক পরিচালিত কলেজ সমূহের অধ্যক্ষবৃন্দ, সমিতির কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে চসিক পরিচালিত কলেজ সমূহ থেকে সম্প্রতি অবসরগ্রহণকারী ২২ জন শিক্ষককে বিদায় সম্মাননা দেওয়া হয়।
সম্প্রতি স্কুল ও কলেজের ২৫২ জন শিক্ষকে স্থায়ীকরণ করায় সমিতির পক্ষ থেকে মেয়র মহোদয়কে ক্রেস্ট ফুল ও শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে সম্মাননা জ্ঞাপন করেন।
আলোচনার পর কলেজ শিক্ষকদের পরিবেশনায়, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী শাহরিয়ার খালেদ ও সম্প্রতি নতুনকুড়ি টেলিভিশন প্রতিযোগিতায় আধুনিক গানে ২য় সেরা হওয়া অপর্ণাচরণের শিক্ষার্থী তুস্মি দাসের গান পরিবেশন হয়।
