শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ছাত্রশিবিরের ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠান

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

  সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সোনারগাঁ থানার উদ্যোগে ৮০০ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৬ ডিসেম্বর (শনিবার) সোনারগাঁও সরকারি কলেজে মহাসমারোহে এ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সোনারগাঁ থানার সেক্রেটারি নাজমুস সাকিবের সঞ্চালনায় এবং শিবিরের সোনারগাঁ থানার সভাপতি আ: আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত নারায়ণগঞ্জ–৪ (ফতুল্লা) আসনের সংসদ সদস্য ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল জব্বার।

প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ–৩ (সোনারগাঁ–সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রিন্সিপাল ড. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ–৪ আসনে দলের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আ: জব্বার বলেন, অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী সময়ের মূল্যায়ন না করায় পরবর্তীতে হারিয়ে গেছে। যারা আগামীর দিনে ভালো থাকতে চায় তাদের অবশ্যই কলেজ জীবনের দুই বছরকে গুরুত্ব দিতে হবে। যারা এই সময়কে মূল্যায়ন করবে, তাদের দিনগুলো হবে সম্ভাবনাময়। মোবাইল ফোন আমাদের নিয়ন্ত্রণ করবে না—আমরাই মোবাইল নিয়ন্ত্রণ করব।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রশিবির বা ছাত্রদল আমার জন্য কি করবে সেটি বিবেচ্য নয়; একজন ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে আমি তাদের কাছে নিরাপদ কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সেই নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা না যায়, তবে কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা উচিত। একইভাবে যে দলের কাছে দেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে, সেই দলকেই জনগণ এবার নির্বাচিত করবে।

প্রধান মেহমান প্রিন্সিপাল ড. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মাস্টারমাইন্ডের ভূমিকা রেখেছে। ৫ আগস্টের আগে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা–পরিবেশ অনুপস্থিত ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, স্বাধীনতার পর কখনো তা দেখা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, সোনারগাঁও সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর আবুল কালাম সাহেবের নেতৃত্বে এখানকার শিক্ষার্থীরা উন্নত শিক্ষার পরিবেশ উপভোগ করবে বলে আশা করি। ইসলামী ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের শুধু উন্নত পড়ালেখার দিকেই নয়, বরং আল্লাহর পথে ও জান্নাতের পথে ডাকছে—এটাই ছাত্রশিবির ও ছাত্রীসংস্থার কাজ। আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুল (সা.) প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করলেই দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা অর্জন সম্ভব।

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য হাফেজ ইউসুফ ইসলাহী বলেন, একজন শিক্ষার্থীর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কাজ হচ্ছে পড়াশোনা ও জ্ঞান অর্জন। গত পনের বছরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারতের প্রেসক্রিপশনে চালিত সেই শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে। পড়ালেখা ছাড়াই ভালো ফল করা যেত—যা শিক্ষার্থীদের মেধাশূন্য করেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের দক্ষ ও মেধাবী করে গড়ে তুলতে যে পরিকল্পনা হাতে নেয়—দেশের অন্য কোনো সংগঠন তা করে না।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ জেলার সেক্রেটারি হাফিজুর রহমান বলেন, যারা জীবনকে সুন্দরভাবে গড়তে চাও—ছাত্রশিবির তোমাদের জন্য একটি উন্মুক্ত দ্বার। নিয়মিত পড়াশোনা করলে ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার পাশাপাশি জীবনে সফলতার শিখরে পৌঁছানো সম্ভব।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ফাতেমা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রিন্সিপাল ড. আজগর আলী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মোঃ আকরাম হোসাইন, সেক্রেটারি হাসিবুল ইসলাম সিফাত, ইসলামী ছাত্রীসংস্থা সোনারগাঁ থানার সভানেত্রী আছিয়া আক্তার প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সোনারগাঁ উত্তর আমীর মাওলানা ইসহাক মিয়া ও সোনারগাঁ দক্ষিণের সেক্রেটারি আসাদুল ইসলাম।

শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ছাত্রশিবির সোনারগাঁ থানার সভাপতি আ: আজিজ এবং ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন শিশু শিল্পী রাশেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ৮০০ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং প্রত্যেকের হাতে ছাত্রশিবিরের একটি করে উপহার প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়।