দামুড়হুদায় এখনও টিকে আছে কামারশিল্প

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

  শরীফ উদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা

দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে লোহা পিটিয়ে কৃষি উপকরণ তৈরি করে আসছেন পংকজ কর্মকার। ডুগডুগি হাটের গোরস্থানের বিপরীত পাশে একটি কামারশালায় দা, নিড়ানি, হাসুয়া, কাঁচি, কোদাল ও কুড়ালসহ নানা ধরনের কৃষি সরঞ্জাম তৈরি করেন তিনি। তবে আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রভাবে লাঙ্গলের ফলার ব্যবহার এখন অনেক কমে গেছে।

পংকজ কর্মকার জানান, মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবা ও দাদার কাছ থেকে এই কাজের হাতেখড়ি নেন তিনি। বংশপরম্পরায় তাদের চৌদ্দ পুরুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘ ৩৭ বছরের এই কর্মজীবনে তিনি প্রতিদিন কোনো দিন ৪ হাজার টাকা, আবার কোনো দিন ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার দুই ছেলে স্বর্ণের দোকানে কাজ করলেও ছোট ছেলে বাবার সঙ্গে কামারশালায় সহযোগিতা করছেন। লোকনাথপুর, পরানপুর, জয়রামপুর, ছোট দুধপাতিলা ও কাদিপুরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কৃষকরা নিয়মিত তার কাছে কৃষি সরঞ্জাম তৈরি করতে আসেন।

পংকজ কর্মকার আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আমি চারবার স্ট্রোক করার পরেও এই লোহা পেটানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এ অঞ্চলের কৃষকরা আমার কাজ পছন্দ করেন বলেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো শক্তি পাই না, তবে ছেলেটা সহযোগিতা করে বলে এখনো টিকে আছি। বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগে না, কাজের ফাঁকে কৃষকদের সঙ্গে গল্প করেই সময় কেটে যায়।”

তিনি আরও জানান, বর্তমানে আধুনিক চাষাবাদের যুগেও সারা বছরই তার কাজের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে ধান ও পাট কাটার মৌসুমে কাজের চাপ বেড়ে যায়। এই পেশার মাধ্যমেই তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সুখে দিনাতিপাত করছেন।