নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে গোলাগুলি: নিহত বেড়ে ৬

প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:১৬ | অনলাইন সংস্করণ

  নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে পৌঁছেছে। সামছুদ্দিন ওরফে কোপা সামছু (৫৫) নামে আরও এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের তথ্য পাওয়া গেছে।  

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চরের জঙ্গল থেকে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার জাগলার চর থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

নিহত সামছুদ্দিন হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং কোপা সামছু বাহিনীর প্রধান ছিলেন।

নিহত অন্যরা হলেন— আলাউদ্দিন বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন, মোবারক হোসেন, আবুল কাশেম, হক সাব ও কামাল উদ্দিন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়। গেল মঙ্গলবার দুপুরে দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুক যুদ্ধ ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে দুই গ্রুপের ছয়জন নিহত হন। তখন কোপা সামছু মারা গেলেও লাশ পাওয়া যায়নি, আজ বিকেলের দিকে সামছুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, বুধবার রাতে পাঁচজনের মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

হাতিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. সাইফুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ঘটনায় নিহত সামছুদ্দিনের ছোট ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরের দিকে সামছুদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।