পর্যটক মুখর কক্সবাজার, থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনে পুলিশের বিধিনিষেধ

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

  এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার অফিস

প্রতিবছর পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা অবকাশযাপনে কক্সবাজার ছুটে এসেছেন। 

পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মঙ্গলবার সকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশের মানুষ শোকে স্তব্ধ। এর ফলে অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন।

এদিকে থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে আজ বুধবার রাতে সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে সাত ধরনের বিধিনিষেধ দিয়েছে জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, থার্টি ফার্স্ট নাইটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা বা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থানে কিংবা রাস্তায় কোনো কনসার্ট, নাচ-গানের অনুষ্ঠান করা যাবে না। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলক বিশ্বাস বলেন, বিধিনিষেধের পাশাপাশি পুলিশ শহরের প্রবেশমুখ ও গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি করবে।

সৈকতে লাখো পর্যটক

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিনে বরাবরই কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নামে। এ সময়ে স্থানীয়রাও সৈকতে ভিড় জমায়। কিন্তু ৮-৯ বছর ধরে নিরাপত্তার কারণে সৈকতের বর্ষবিদায় ও বরণে উন্মুক্ত অনুষ্ঠান হচ্ছেনা। অবশ্যই শহরের কয়েকটি তারকা মানের হোটেল ও রিসোর্টের অভ্যন্তরে নানা আয়োজন থাকে। তবে এবার বছরের শেষ দিনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব অনুষ্ঠানও বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্ট মালিকেরা বলছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশের মানুষ শোকাহত। এ কারণে অনেকেই আজ বুধবারের হোটেলের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছে। আবার যারা গতকাল মঙ্গলবার বা বুধবার আসার অপেক্ষায় ছিলেন-তাদেরও বেশিরভাগ আসছেন না।

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউজ ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারের মতো পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা আছে। প্রতিবছর বর্ষবিদায় ও বরণে বিপুল পর্যটক ভ্রমণে আসেন জানিয়ে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বরণে কোনো ধরনের যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ চার স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করেছে।