ঢাকা শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মাদারীপুরে চায়না দুয়ারীর বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান

মাদারীপুরে চায়না দুয়ারীর বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান

দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষার জন্যে মাদারীপুরে নদ-নদী, বাওড়, খাল, বিল এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে অবৈধভাবে ব্যবহারিত চায়রা দুয়ারী ও কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে মৎস্য অফিস। এরই মধ্যে ভ্রাম্যমান অভিযানের মাধ্যমে ৬০টি চায়না দুয়ারী জাল, ৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ১টি মশারি জাল আটক করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। পরে আটক করা চায়না দুয়ারী ও জাল পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়।

মাদারীপুর জেলা মৎস্য অফিস জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ও শুক্রবার সকালে মাদারীপুরের কালকিনিতে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুর, বাঁশগাড়ী, পূর্ব এনায়েতনগর ও নবগ্রাম ইউনিয়ন, সদর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ সংলগ্ন পাঁচখোলা, মহিষেরচর, জাফরাবাদ, শ্রীনদী, রাজৈর উপজেলার টেকেরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এছাড়া শিবচর উপজেলার পদ্মা নদী সংলগ্ন তীরবর্তী এলাকায় চায়রা দুয়ারীর বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আড়িয়াল খাঁ নদীতে দেশীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়।

কালকিনি উপজেলায় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কালকিনি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার দত্ত। সদর উপজেলায় অভিযানের নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তপন মজুমদার।

নদী তীরবর্তী এলাকাবাসী জানান, মাদারীপুরের নদ-নদী, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে ‘চায়না দোয়ারি’ নামে এক প্রকার ঘন জালে সয়লাব হয়ে গেছে। জলাশয়ে এই বিশেষ ধরণের জাল পেতে অবাধে মাছ শিকার করছে জেলে ও মৎস্য শিকারীরা। এই জালে ধরা পড়ছে সব ধরণের ছোট-বড় মাছ ও ক্ষুদ্র মাছের পোনা। ফলে বড় ধরণের হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য সম্পদ। এধারা অব্যাহত থাকলে একেবারে মৎস্য শূণ্য হয়ে পড়বে জেলার মৎস্য ভান্ডার।

নদীপাড়ের বাসিন্দা ও জেলেদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ‘চায়না দোয়ারি’ জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে অসাধু মৎস্য শিকারীরা। প্রায় ৬০ থেকে ৮০ ফুট লম্বা একেকটি চায়না দোয়ারি জালের দাম ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা।

লোহার ৪টি শিক দিয়ে খোঁপ-খোঁপ আকারে থাকে এই 'চায়না দোয়ারি'তে। অতি সূক্ষ্ম ঘন চায়না দোয়ারি জালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো নদ-নদী, বিল-বাওর বা অন্যান্য জলাশয়ে মাটির সঙ্গে লম্বা-লম্বিভাবে লেগে থাকে এবং দু'দিক থেকে মাছ ঢুকতে পারে।

কালকিনি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার বলেন, ‘অবৈধ চায়না দুয়ারী ধংসে আমাদের এ রকম অভিযান চলমান থাকবে। যদি কোথাও এরকম দুয়ারীর সন্ধান পাওয়া যায়, আমাদের জানালে অভিযান পরিচালনা করব। দেশীয় মাছ রক্ষার জন্যে সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, ‘অবৈধ চায়না দোয়ারিসহ যেসব উপকরণ মাছের জন্যে হুমকি তা উঠানোর জন্যে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া জেলার সর্বত্র মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার স্থাপন, উদ্বুদ্ধকরণ সভা করেও চায়না দুয়ারির বিরুদ্ধে প্রচারণা চলছে। এছাড়া জেলাব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।’

মাদারীপুর,অভিযান
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত