সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সচিব শহীদ খান কারাগারে
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন বেলা আড়াইটার দিকে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক মো. তৌফিক হাসান।
আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, আসামি আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান মামলার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আছে মর্মে জানা যায়। মামলাটি তদন্তাধীন। এমতাবস্থায় মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়ায় পর্যন্ত তাকে জেলে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে পরবর্তীতে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিকে পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে।
এর আগে, শহীদ খানকে গতকাল মধ্যরাতে শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
মামলার বিবরণী অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ অগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেগুনবাগিচায় সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যে মামলার বাদী শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম বেতারের মাধ্যমে ডিআরইউ’র অডিটোরিয়ামে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা পান।
১৫ মিনিট পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন ডিআরইউ’র অডিটোরিয়ামে কিছু লোককে ঘেরাও করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলে স্লোগান দিচ্ছে এবং একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছে। বাদী বক্তব্যরত ব্যক্তিকে হেফাজতে নেন এবং উনাকে চিনতে পারেন উনি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।
এ সময় উপস্থিত লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী (৭৫) ‘মঞ্চ ৭১’ এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও উপস্থিত অন্যদের প্ররোচিত করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
তার এই ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যের জন্য উপস্থিত লোকজন তাদের ঘেরাও করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলে স্লোগান দিচ্ছিল। তিনিসহ অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জন পরস্পর সহায়তাকারী হিসেবে দেশকে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনার অপরাধ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অগস্ট ডিআরইউতে মঞ্চ ৭১ এর গোল টেবিল অনুষ্ঠান থেকে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরদিন ২৯ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক আমিরুল ইসলামের দায়ের করা সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।
আসামিরা হলেন– লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো.আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
