হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করবে সরকার

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:১০ | অনলাইন সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণে সরকারের ক্ষমতা সীমিত করে ১৯৯৪ সালে জারি করা একটি সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে সব ধরনের জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণে সরকারই চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায়টি প্রকাশ করেন। এর আগে গত ২৫ আগস্ট রায়ের মূল ঘোষণা দেওয়া হলেও সেদিন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়নি।

ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ১৯৯৪ সালের সার্কুলারটিকে চ্যালেঞ্জ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত রুল নিষ্পত্তি করে সার্কুলারটি অবৈধ ঘোষণা করেন।

রায়ে আদালত বলেন, ১৯৮২ সালের ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ—যা বর্তমানে ওষুধ ও কসমেটিক্স আইন, ২০২৩—এর বিধান অনুযায়ী ওষুধের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ সরকারের এখতিয়ার। কিন্তু ১৯৯৪ সালের সার্কুলারে ১১৭টি ওষুধ ছাড়া বাকি সব ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্পণ করা আইনগতভাবে সঠিক ছিল না।

রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতে বলেন, ওষুধ যেহেতু জীবন রক্ষার অপরিহার্য উপাদান, মূল্য বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণহীনতা সরাসরি নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই সরকারের ক্ষমতা সীমিত করার ওই সার্কুলার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২ অনুসারে মোট ৭৩৯টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। তবে পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৪ সালের সার্কুলারে সরকারের ক্ষমতা সীমিত করা হয় এবং শুধুমাত্র ১১৭টি ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখা হয়—অন্য সব ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর।