আবু সাঈদ হত্যা মামলা: তদন্ত কর্মকর্তার তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য আজ
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেবেন তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন। মামলায় বেরোবির সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ মোট ৩০ জন আসামি রয়েছেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আজকের সাক্ষ্যে তদন্ত কর্মকর্তা প্রথমেই আসামিদের ব্যক্তিগত দায়ের বিষয়টি তুলে ধরবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। এর আগে গতকাল রোববারের সাক্ষ্যে তিনি ১৬ জন আসামির সংশ্লিষ্টতা ট্রাইব্যুনালের সামনে তুলে ধরেন। আজ বাকি আসামিদের বিষয়ে সাক্ষ্য সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
২৫ নম্বর সাক্ষী হিসেবে রুহুল আমিনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হচ্ছে। তদন্তকালে কোথা থেকে কী আলামত জব্দ করা হয়েছে, কোন তারিখে কী ধরনের কার্যক্রম চালানো হয়েছে—এসব বিষয় তিনি সাক্ষ্যে উল্লেখ করছেন। গত ১৮ ডিসেম্বর তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য শেষে গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিদের আইনজীবীরা তাকে জেরা করবেন।
এর আগে ১০ ডিসেম্বর মামলায় জবানবন্দি দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। একই দিনে তদন্ত সংস্থার রেকর্ড সংরক্ষণকারী এসআই মো. কামরুল হোসেনের সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়। এ পর্যন্ত মামলায় মোট ২৫ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
৯ ডিসেম্বর ২২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ধারাবাহিক ঘটনা তুলে ধরেন এবং সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে রাখার একটি নতুন সেইফ হাউজের তথ্য দেন। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ভূমিকা নিয়েও ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন তিনি।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ছয়জন—এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল এবং আনোয়ার পারভেজ। বাকি আসামিরা এখনও পলাতক।
চলতি বছরের ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর আগে ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
বর্তমানে মামলার ২৪ জন আসামি, যার মধ্যে বেরোবির সাবেক ভিসিও রয়েছেন, পলাতক। তাদের পক্ষে সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় এবং ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। এ মামলায় মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৬২ জন।
