বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস
চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪.৮ শতাংশ
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৪০ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ, যেখানে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা বেড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। গত অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ছিল ৪ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সময়োপযোগী অর্থনৈতিক সংস্কার জরুরি বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ধীরগতির পর দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এ পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী ধারা ধরে রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে এ ধারা টেকসই করতে হলে সময়সাপেক্ষ ও কার্যকর সংস্কার অপরিহার্য, বিশেষ করে তরুণ ও নারীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে।
প্রতিবেদনটি আরও জানিয়েছে, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা হলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখনো চাপের মুখে রয়েছে। বাইরের অর্থনৈতিক চাপ এবং আর্থিক খাতের ঝুঁকিও পুরোপুরি কাটেনি।
খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও রাজস্ব আদায় দুর্বল এবং রাজস্ব-ব্যয়ের ঘাটতি বেড়েছে, যা অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে এবং শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ ৬৯ শতাংশ থেকে কমে ৫৮.৯ শতাংশে নেমেছে। নতুন কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ২৪ লাখ নারী শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে এবং শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। যেখানে আগে এ হার ছিল ৬৯ শতাংশ, তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশে।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে জানানো হয়, নতুন কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ২৪ লাখ নারী এখনো শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দৃঢ়তা দেখিয়েছে, তবে এই স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সংস্কার জরুরি।
তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির পথ নিশ্চিত করতে এবং আরও বেশি ও উন্নতমানের চাকরি সৃষ্টি করতে, বাংলাদেশের জন্য সাহসী সংস্কার এবং দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে আঞ্চলিক রাজস্ব বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা দূর করা, জ্বালানি ভর্তুকি হ্রাস, নগরায়ণ পরিকল্পনা, এবং বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা।
